বহুপর্যায়ী নমুনায়ন কী? স্তরিত নমুনায়ন ও বহুপর্যায়ী নমুনায়নের মধ্যকার পার্থক্য লিখ

বহুপর্যায়ী নমুনায়ন কী?  স্তরিত নমুনায়ন ও বহুপর্যায়ী নমুনায়নের মধ্যকার পার্থক্য

উত্তর: নমুনায়ন হলো একটি কৌশল। নমুনা নির্বাচন কর হয় কৌশলের মাধ্যমে। এ কৌশলকে সাধারণত দু'ভাগে ভাল করা যায়। যথা সম্ভাবনা ও নিঃসম্ভাবনা নমুনায়ন। সম্ভাবন নমুনায়ন পদ্ধতির অন্যতম পদ্ধতি হচ্ছে বহুপর্যায়ী নমুনায়ন।

বহুপর্যায়ী নমুনায়ন কী? স্তরিত নমুনায়ন ও বহুপর্যায়ী নমুনায়নের মধ্যকার পার্থক্য

বহু পর্যায়ী নমুনায়ন: এই পদ্ধতি গুচ্ছ নমুনায়নে একটি বর্ধিত রূপ। এই পদ্ধতিতে প্রথমে সমগ্রকটিকে কয়েকটি গুচ্ছে পরিণত করে দৈব নমুনায়নের সাহায্যে কয়েকটি গুচ্ছ চয়া করা হয়। চয়নকৃত গুচ্ছগুলোকে প্রথম পর্যায়ী একক বলে তারপর পর্যায়ী একক বা গুচ্ছগুলোকে আবারও গুচ্ছে পরিণ করে সেখান থেকে দৈবচয়নের সাহায্যে নতুন কিছু গুচ্ছ চায় করা হয়। অনুরূপভাবে প্রয়োজন অনুসারে কয়েক পর্যায়ে গুল চয়ন করে শেষ পর্যায় থেকে দৈবচয়নের মাধ্যমে নমুনার জন্য একক সংগ্রহ করা হলে তাকে বহু পর্যায় নমুনায়ন বলা হয়।

পরিশেষে বলা যায় যে, বহুপর্যায়ী নমুনায়ন ক্রমান্বয়ে তথ্য সমা করে। বিশেষ ক্ষেত্রে বহু পর্যায়ী নমুনায়নের ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ।


স্তরিত নমুনায়ন ও বহুপর্যায়ী নমুনায়নের মধ্যকার পার্থক্য

উত্তর: স্তরিত নমুনায়ন ও বহুপর্যায়ী নমুনায়ন সরল চোখে। দেখলে অনেকাংশে একই রকম মনে হলেও এদের মধ্যে কতকগুলো পার্থক্য দৃশ্যমান।

স্তরিত সমুনায়ন ও বহুপর্যায় নমুনায়নের মধ্যকার পার্থক্য: নিচে স্তরিত নমুনায়ন ও বহুপর্যায়ী নমুনায়নের মধ্যকার পার্থক্যগুলো নিচে দেওয়া হলো।

১. সমগ্রকের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যর ভিত্তিতে বিভক্ত করে যে দৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়, তাকে স্তরিত নমুনায়ন বলা হয়। অন্যদিকে, একাধিক পর্যায় নির্বাচন করার পদ্ধতিতে বহুপর্যায়ী নমুনায়ন বলা হয়।

২. স্তরিত নমুনায়ন পদ্ধতিতে খরচ বেশি পড়ে। অপরদিকে, বহুপর্যায়ী নমুনায়ন পদ্ধতিতে খরচ তুলনামূলক বেশি।

৩. স্তরিত নমুনায়নে নমুনা বিচ্যুতির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হয়। বহুপর্যায়ী হওয়ার কারণে, নমুনা বিচ্যুতি বেশি হয়।

৪. অধিক প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনার প্রয়োজন হলে স্তরিত নমুনায়ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, বহুপর্যায়ী নমুনায়নে পর্যায়ের সংখ্যা বেশি হলে বহুপর্যায়ী পদ্ধতির ব্যবহার দেখা যায়।

৫ স্তরিত নমুনায়ন পদ্ধতিতে সমগ্রকের বিশেষ উদ্দেশ্যে কতগুলো অংশে ভাগ করা হয় এবং এ ভাগগুলোই হলো স্তর। বহুপর্যায়ী নমুনায়নে প্রথমেই সমগ্রককে যে কতগুলো বড় বড় নমুনা এককে  বিভক্ত করা হয়। সেগুলোকে প্রাথমিক নমুনা একক বলা হয়।

৬. প্রতিটি স্তর থেকে দৈবচয়িতভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বহুপর্যায়ী নমুনায়নে প্রাথমিক নমুনা একককে পুনরায় ক্ষুদ্র ক্ষুন্ন অংশে বিভক্ত করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

৭. স্তরিত নমুনায়নের ক্ষেত্রে পূর্বনির্ধারিত বৈশিষ্ট্য এর ভিত্তিতে স্তরবিন্যাস করা হয়। বহুপর্যায়ী নমুনায়নে অনুসন্ধানের ক্ষেত্র বড় হলেই পর্যায় সৃষ্টি করা হয়।

৮. স্তরিত নমুনায়ন তুলনামূলকভাবে সহজ ও সরল পদ্ধতি। বহুপর্যায়ী নমুনায়ন জটিল এবং ধাপে ধাপে পরিচালনা করতে হয়।

৯. স্তরিত নমুনায়ন-এ তথ্য সংগ্রহ হয় নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য অনুসারে গঠিত স্তর থেকে। বহুপর্যায়ী নমুনায়ন-এ তথ্য সংগ্রহ হয় বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে।

১০. স্তরিত নমুনায়ন বেশি নির্ভুল ও সঠিক ফলাফল প্রদান করে, কারণ প্রতিটি স্তরের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়। বহুপর্যায়ী নমুনায়ন-এ পর্যায় বেশি হলে সঠিকতা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

স্তরিত নমুনায়ন ও বহুপর্যায়ী নমুনায়ন উভয়ই সম্ভাব্য নমুনায়নের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। স্তরিত নমুনায়ন পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সমগ্রককে স্তরে ভাগ করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যা তুলনামূলকভাবে বেশি নির্ভুল ও সঠিক ফলাফল দেয়। অপরদিকে, বহুপর্যায়ী নমুনায়ন পদ্ধতি বড় আকারের এবং জটিল সমগ্রকে ধাপে ধাপে ভাগ করে নমুনা সংগ্রহে সহায়ক, বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের সময়।


No comments:

Post a Comment