সহসম্বন্ধ ও নির্ভরণের মধ্যে পার্থক্য লিখ। সহসম্বন্ধ সহগের অসুবিধা আলোচনা কর।

সহসম্বন্ধ ও নির্ভরণের মধ্যে পার্থক্য ও সহসম্বন্ধ সহগের অসুবিধাসমূহ

ভূমিকা: সহসম্বন্ধ ও নির্ভরণ উভয়ই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত চলকের মধ্যে সম্পর্কের মাত্রা ও গতির ধারা নির্ণয় করতে ব্যবহৃত হয়। তবে এদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান।

সহসম্বন্ধ ও নির্ভরণের মধ্যে পার্থক্য লিখ। সহসম্বন্ধ সহগের অসুবিধা আলোচনা কর।

সহসম্বন্ধ ও নির্ভরণের মধ্যে পার্থক্য: সহসম্বন্ধ ও নির্ভরণের মধ্যে পার্থক্যগুলো নিম্নে দেওয়া হলো-

১. সহসম্বন্ধ এর উদ্দেশ্য হলো দুই বা ততোধিক চলকের মধ্যে পরিবর্তনের কোন যোগসূত্র আছে কি না তা প্রকাশ করা।

অপরদিকে, নির্ভরণ বিশ্লেষণসহ সম্বন্ধপূর্ণ দুটি চলকের একটি অপরটির উপর কতখানি নির্ভর করে তা প্রকাশ করে।

২. সহসম্বন্ধ দ্বারা দুটি চলকের পরিবর্তনের মধ্যে সম্পর্ক কতটুকু তা পরিমাপ করা গেলেও একটি চলকের পরিবর্তনের তুলনায় অন্য চলকের সম্ভাব্যের কি পরিবর্তন ঘটবে তা নির্ণয় করা যায় না। অন্যদিকে, নির্ভরণ এর সাহায্যে একটি চলকের তুলনায় অন্য চলকে গড় পরিবর্তন কিরূপ হবে তা পরিমাপ করা যায়।

৩. দুটি চলকের সহসম্বন্ধ দ্বারা চলকটির পরিবর্তনের কোন কারণগত সম্পর্ক প্রকাশিত হয় না। নির্ভরণ বিশ্লেষণ দ্বারা একটি চলকের পরিবর্তন যে অন্য চলকের পরিবর্তনের কারণ একথা প্রমাণিত হয়।

৪. সহসম্বন্ধ বিশ্লেষণ ব্যবসায়ের বিভিন্ন কার্যকলাপের বা উপাদানের মধ্যে সম্পর্ক নিরূপণে ব্যবসায়ীকে সাহায্য করে।

নির্ভরণ বিশ্লেষণ কোন উপাদানের গতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে অন্য উপাদানে যে গতিশীলতা পরিলক্ষিত হয় সে সম্পর্কে যথার্থ পূর্ব অনুমানে পৌঁছাতে ব্যবসায়ীকে সাহায্য করে।

৫. সমসম্বন্ধের সংখ্যাত্মক প্রকাশকে সহসম্বন্ধ অংক বলে। নির্ভরণের সংখ্যাত্মক প্রকাশকে নির্ভরাঙ্ক বলে।

একই বা বিপরীত দিকে দুই বা ততোধিক চলকের পরিবর্তিত হওয়ার প্রবণতাকে সহসম্বন্ধ বলে। আর একটি চলকের প্রভাবে অন্য চলকের মধ্যে পরিবর্তন সাধিত হলে তা নির্ণয় করার পদ্ধতি হলো নির্ভরণ। এদের মধ্যে সামান্য কিছু মিথ্যা থাকলেও আসলের পাল্লাটাই ভারী।

সহসম্বন্ধ সহগের অসুবিধা ও সীমাবদ্ধতা বা সমস্যাসমূহ তুলে ধর।

দুটি চলক পরস্পরের মধ্য কিভাবে এবং কি পরিমানে সম্বন্ধযুক্ত সেটা সহসম্বন্ধ নির্দেশ করে। সামাজিক পরিসংখ্যানে একাধিক চলকের মধ্য পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়ে সহসম্বন্ধ  একটি আলোচিত পরিসংখ্রানিক পদ্ধতি।

সহসম্বন্ধ সহগ: দুটি চলকের মধ্য কি পরিমাণে সহসম্বন্ধ বিদ্যমান সেটা জানার প্রয়োজন হয়। দুই ও ততোধিক পরিবর্তনশীল চলকের সম্পর্কের প্রকৃতি এবং পরিমাণের গানিতিক পরিমাণকে সহসম্বন্ধ সহগ বলে।যা r প্রতীকের সাহায্য প্রকাশ করা হয়।

সহসম্বন্ধ  সহগের অসুবিধা ও সীমাবদ্ধতা

সহসম্বন্ধ  সহগের মান ধনাত্মক ও ঋণাত্মক উভয়ই হতে পারে। তবে এর মান -১ থেকে +১ এর মধ্য সীমাবদ্ধ থাকে। নিম্নে সহসম্বন্ধ সহগের অসুবিধা দেওয়া হয়।

  • পরিবর্তকের সাধারণ সম্বন্ধ নির্দেশ করে মাত্র। এর সঠিকতা নিরুপণ করতে পারে না।
  • সহসম্বন্ধ পদ্ধতি একটি জটিল পদ্ধতি। এর মাধ্যমে কোন বিষয়ে ভূল ব্যাখ্যা প্রদান করা হতে পারে।
  • সহসম্বন্ধ  নির্ণয়ে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। কেননা, এটি নির্ণয় পদ্ধতি জটিল।
  • সহসম্বন্ধ কোন দফার প্রান্তিক মান দ্বারা প্রভাবিত।
  • অনেক সময় সহসম্বন্ধ  সহগের তুলনায় নির্ভরণের প্রয়োজন হয়।

পরিশেষে বলা যায় যে, সহসম্বন্ধের বহুবিধ সুবিধা থাকলেও ক্ষেত্রে বিশেষ এর কতকগুলো অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়। অসুবিধাগুল্যেই মূলত সীমাবদ্ধতা। তবে সুবিধার তুলনায় এর অসুবিধাগুলো খুবই নগণ্য।

No comments:

Post a Comment