সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান ব্যাখ্যা কর।

সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান ব্যাখ্যা কর।

সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান ব্যাখ্যা কর

অথবা, সমাজবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা হয় কেন?
ভূমিকাঃ মাজবিজ্ঞান সমাজের গঠন কাঠামো ও মানুষের জীবনধারা, সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দেয়। আসলে সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান কিনা এ বিষয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। কোনো বিষয় বিজ্ঞান হিসেবে স্বৃকীতি লাভ করতে হলে তার মধ্য কতক গুলো বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। আজ আমরা জানবো আসলেই সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান কি না সে বিষয়ে।
সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান ব্যাখ্যা কর



সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান কিনাঃ  সমাজবিজ্ঞান কি? সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয় সে বিষয় জানতে হলে আগে আমাদের সমাজবিজ্ঞান ও বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে হবে।
সমাজবিজ্ঞানঃ যে শাস্ত্র সমাজের উৎপত্তি, বিকাশ প্রত্যয় ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিজ্ঞান ভিত্তিক আলোচনা করে তাকেই সমাজবিজ্ঞান বলে । অর্থাৎ সমাজবিজ্ঞান হচ্ছে জ্ঞানের এমন একটি শাখা যা সমাজ ও মানবিক আচরণ নিয়ে আলোচনা করে।
বিজ্ঞানঃ ভৌত বিশ্বের যা কিছু  পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য তার সুশৃঙ্খল নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞান ভান্ডারের নামই বিজ্ঞান । আবার কোন বিষয় সম্পর্কিত পর্যবেক্ষণ ও যাচাইয়ের ভিত্তিতে অর্জিত বিশেষ জ্ঞানই হলো বিজ্ঞান।
যেহেতু বিজ্ঞান হলো কোন বিষয় সম্পর্কে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সুসংবদ্ধ জ্ঞানভান্ডার। সমাজবিজ্ঞান অন্যান্য বিজ্ঞানের মত তথ্যর যাচাই বাছায় ও বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুসংহত জ্ঞান অন্বেষণের প্রচেষ্ঠা চালাই যা মূলত বিজ্ঞানভিত্তিক তাই এই অর্থে সমাজবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা হয়।
সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি হিসেবে তার গবেষণা কাজ চালায় এবং বিষয় নির্বাচন ও তথ্য সংগ্রহ ইত্যাদির কাজ বিজ্ঞানসম্মত ভাবে করে ।আর সে তথ্যগুলোর ভিত্তিতেই সমাজবিজ্ঞান ভবিষৎবাণী করে।
সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান যা কতকগুলো বৈশিষ্ট্যর মাধ্যমে প্রকাশ পায় যা নিম্নরুপঃ-
১। সমস্যা নির্বাচনঃ সমাজবিজ্ঞান প্রথমত বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সমস্যা নির্বাচন করে থাকে । এটি সমাজবিজ্ঞানের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
২। পর্যবেক্ষণঃ সমাজবিজ্ঞান কোন পর্যবেক্ষণ এর মাধ্যম তাদের সমস্যা নির্বাচন করে ।
৩। তথ্য সংগ্রহঃ সমাজবিজ্ঞান যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করে তারপর সমাজবিজ্ঞান গবেষণা করে।
৪। তথ্যর শ্রেণীবিন্যাস করণঃ সমাজবিজ্ঞান সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেই তথ্যের শ্রেণীবিন্যাস করে।
৫। বিবৃতি তৈরিঃ সমাজবিজ্ঞান তথ্য শ্রেণি বিন্যাস করার পর সেটার একটি বিবৃতি তৈরি করে।
৬। যাচাইকরণঃ সমাজবিজ্ঞান যে বিবৃতি তৈরি করে তা বাস্তব সম্মত কিনা তা যাচাই- বাচাই করে।
৭। ভবিষ্যৎবাণীঃ সমাজবিজ্ঞান তথ্যটি যাচাই-বাচাই করার পর ভবিষ্যৎবাণী করে । যা সমাজের জন্য মঙ্গল ও অমঙ্গল হতে পারে।
উপরের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বলা যায় সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান । সমাজবিজ্ঞান যে কোন সমস্যা বিজ্ঞানসম্মতভাবে সমাধান করে। এটি সমাজের সমস্যা নির্বাচন, যাচাই ও বিশ্লেষণ করে। তাই নিঃসন্দেহে সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post