সহ-সম্পর্ক কি? সহ সম্পর্কের প্রকারভেদ

সহ-সম্পর্ক কি? সহ সম্পর্কের প্রকারভেদ

ভূমিকাঃ সহ-সম্পর্ক দুটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত চলকের মধ্যে সম্পর্কের প্রকৃতি পরিমাপ করে। বিভিন্ন পরিসংখ্যানের বিভিন্ন মতামত পাওয়া গেছে সহ-সম্পর্ক সম্পর্কে। নিম্নে সহ-সম্পর্কের সংজ্ঞা দেওয়া হলো:

সহ-সম্পর্ক কি? সহ সম্পর্কের প্রকারভেদ

সহ-সম্পর্কের সংজ্ঞা: সাধারণ কথায় সহ-সম্পর্কে হলো দুই বা ততোধিক পরিবর্তনশীল চলকের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক। সামাজিক পরিসংখ্যানের দৃষ্টিকোণ থেকে দুই মা ততোধিক চলকের একই সাথে পরিবর্তিত হওয়ার প্রধণতা না পরস্পর নির্ভরশীলতাকে সহ-সম্পর্ক নামে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ, পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি চলকের একটির মান বৃদ্ধি পেলে অপরটি বৃদ্ধি পায় বা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটি হ্রাস পায় অথবা একটির মান বৃদ্ধি পেলে অপরটি হ্রাস পায় বা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটি বৃদ্ধি পায়। যেমন চিনির মূল্য বৃদ্ধি পেলে এর ব্যবহার হ্রাস পায়। অথবা, পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে এর রপ্তানির পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা: নিয়ে কতিপয় ব্যক্তির সহ-সম্পর্কের সংজ্ঞা আলোচনা করা হলো।

ডব্লিউ, আই, কিং (W. 1. King) এর মতে, "দুটি তথ্যসারি বা দুই শ্রেণিঃ তথ্যাবলির কার্যকারণ সম্বন্ধীয় সম্পর্কই হলো সহ বৃদ্ধি সম্পর্ক।"

গুপ্ত এবং গুপ্ত তাদের Business statistics গ্রন্থে বলেন, "Correlation analysis refers to the teachmoques used in measuring the closeness of the relationship between the Variables, অর্থাৎ, তাদের সংজ্ঞানুযায়ী বলা যায়, চলকসমূহের মধ্যকার সম্পর্কের নৈকট্য পরিমাপের কৌশল নিয়ে সহ-সম্পর্ক আলোচনা করে।

কন্নর এর মতে, "কোন উপাত্তের দুই বা ততোধিক চলক সহানুভুতি সহকারে পরিবর্তিত হয় যে, একটির পরিবর্তনের সাথে সাথে অন্যটির ও পরিবর্তন হয় তখন দুটি চলকের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়।

টাটল (A. M. Tutile) এর মতে, "An analysis of the covanaticin of two or more variables is usually called correlation অর্থাৎ, দুই বা ততোধিক চলকের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণ করাকে সহ-সম্পর্ক বলা হয়।

প্রফেসর বডিংটন এর মতে, "যখন দুই বা ততোধিক শ্রেণির উপাত্তের মধ্যে কোন সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয় তাকে সহ-সম্পর্ক বলে।

উপরিউক্ত সংজ্ঞাসমূহ পর্যালোচনা করে আমরা বলতে পারি যে, সহ-সম্পর্ক হলো দুটি চলকের মধ্যকার গারস্পরিক সম্পর্ক যাতে কোন এফটির পরিবর্তন ঘটলে অন্যটিরও পরিবর্তন হয়।

সহ-সম্পর্ক কত প্রকার ও কী কী?

সহ-সম্পর্কের প্রকারভেদ: সম্পর্কের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে সহ-সম্পর্ককে নিম্নোক্ত পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়। নিম্নে সেই সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো-

 ১. পূর্ণ ধনাত্মক সহ-সম্পর্ক: যদি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি চলকের মধ্যে একটির মান বৃদ্ধি পেলে অপরটির মান সমপরিমাপ বৃদ্ধি পায় অথবা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটির মান সমপরিমাণ হ্রাস পায় অথবা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটির মান সমপরিমাণ, হ্রাস পায় তাকে পূর্ণ ধনাত্মক সহ-সম্পর্ক বলে।

২. আংশিক ধনাত্মক সহ-সম্পর্ক: যনি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি চলকের মধ্যে একটির মান বৃদ্ধি পেলে অপরটির মান অসম পরিযাণ বৃদ্ধি পায় অথবা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটির মান অসম পরিমাণ হ্রাস পায় তাকে আংশিক ধনাত্মক সহ-সম্পর্ক বলে।

৩. পূর্ণ ঋণাত্মক সহ-সম্পর্ক: যদি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি চলকের মধ্যে একটির মান বৃদ্ধি পেলে অপরটি সমপরিমাণ, হ্রাস পায় অথবা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটির মান সমপরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাকে পূর্ণ ঋণাত্মক সহ-সম্পর্ক বলে।

৪. আংশিক ঋণাত্মক সহ-সম্পর্ক: যদি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি চলকের মধ্যে একটি মান বৃদ্ধি পেলে অপরটি অসম পরিমাণ হ্রাস পায়, অথবা একটির মান হ্রাস পেলে অপরটির মান অসম পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাকে আংশিক ঋণাত্মক সহ-সম্পর্ক বলে।

৫. শূন্য যা সম্বন্ধহীন সহ-সম্পর্ক: দুটি চলকের মধ্যে একটি চলকের মানের পরিবর্তনের সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট অপর চলকের মানের মধ্যে কোনো পরিবর্তন সূচিত না হলে তাকে শূন্য সহ-সম্পর্ক বলে। এক্ষেত্রে সহ-সম্পর্কের সহগের মাত্রার মান  r = 0 যেমন- করিমের আয় বৃদ্ধি পেলে রহিমের আয় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, সহ-সম্পর্কের এ সকল প্রকারভেদের গুরুত্ব অপরিসীম।

No comments:

Post a Comment