উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরণ ? উপাত্ত শ্রেণিকবদ্ধকরণের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব
ভূমিকা: কোন উদ্দেশ্য সংগৃহীত উপাত্ত এলোমেলো অবস্থায় থাকে, এ অবস্থায় এলোমেলো উপাত্ত গবেষণার কাজে ব্যবহারযোগ্য নয়। তাই সংগৃহীত উপাত্তকে গবেষনার লক্ষ্য অনুযায়ী সাজানো হয়। উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরনের মাধ্যমে সংক্ষেপে উপাত্ত উপন্থাপন করা হয়।যাকে উপাত্ত সংক্ষিপ্তকরন বলা হয়।
উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরণ: উপাত্ত সংক্ষিপ্তকরণ ও উপস্থাপনের প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে শ্রেণিবদ্ধকরণ এটি হলো একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে উপাত্তসমূহকে কতগুলো বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন গুচ্ছ বা শ্রেণিতে বিন্যাস বা সাজানো হয়। সময়, অবস্থান ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য অনুসারে উপায়গুলোকে লাভিং লেখার পদ্ধতিকে শ্রেণিবদ্ধকরণ বলা হয়।
উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরণের পদ্ধতিসমূহ
১. সময়ভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ: সংগৃহীত উপাত্তকে যখন সময় অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণিতে সাজানো হয় তখন তাকে সময়ভিত্তিক বদ্ধকরণ বলে। এক্ষেত্রে উপাত্তসমূহকে দিন, সপ্তাহ, মাস, ইত্যাদির ভিত্তিতে সাজানো হয়।
২. স্থানভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ: সংগৃহীত উপাত্তকে যখন স্থান বা ভৌগোলিক এলাকার ভিত্তিতে সাজানো হয় তাকে ভৌগোলিক বা স্থানভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ বলা হয়।উদাহরণস্বরূপ: এক্ষেত্রে, রাষ্ট্র, অঞ্চল, নগর, থানা, জেলা, বিভাগ এলাকার ভিত্তিতে সাজানো হয়।
৩. গুণভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ: সংগৃহীত উপাত্তকে যখন কোন গুণ বা বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সাজানো হয় তাকে গুণভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ বলে। এক্ষেত্রে বয়স, আয়, পেশা, লিঙ্গ, শিক্ষা ইত্যাদি শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়।
৪. পরিমাপভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ: সংগৃহীত উপাত্তকে যখন কোনো পরিমাণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয় তখন তাকে পরিমাণভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ বলা হয়। এক্ষেত্রে, আয়ের পরিমাণ, উৎপাদনের পরিমাণ, পাসের হার, আকার ইত্যাদির ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়।
উপাত্ত শ্রেণিকবদ্ধকরণের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব
উপাত্ত শ্রেণিকবদ্ধরণের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব নিম্নরুপ:-
১. উপাত্ত শ্রেণিকরণের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সংগৃহীত উপাত্ত সম্পর্কে অনুসন্ধানকারীকে সঠিক ও সুস্পষ্ট ধারণা লা সহায়তা করে এবং সাহায্য করে থাকে।
২. শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রসঙ্গিক উপাত্তগুলোকে বাদ দেওয়া সম্ভব হয়।
৩. শ্রেণিবদ্ধকরণ বিশাল উপাত্ত সারিকে সংক্ষিপ্তকরণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
৪. শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যমূল বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
৫. শ্রেণিবদ্ধকরণ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বা সমগোত্রীয় উপাত্তের মধ্যে তুলনার পথকে সুগম করে।
৬. শ্রেণিবদ্ধকরণ উপাত্ত সারণিবদ্ধকরণের উপযোগী করে তোলে এবং সুন্দরভাবে প্রকাশে সাহায্য করে
৭. শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে উপাত্তকে পরবর্তী পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণের ব্যবহার উপযোগী করে তোলা যায়।
৮. সারণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে উপাত্তকে অন্তনির্হিত তাৎপর্য অনুধাবন করা সহজ হয় এবং সুস্পষ্ট ও সুসংবদ্ধ করে তোলে।
৯. উপাত্তের রৈখিক এবং রৈখিক উপস্থাপন করাও শ্রেণিবদ্ধকরণের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য।
উপসংহার: পরিশেষে অমরা বলতে পারি যে উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরণ পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণের একটি অপরিহার্য ধাপ। এটি উপাত্তকে সুসংগঠিত ও অর্থবোধক করে তোলে, ফলে সহজে বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন সম্ভব হয়। শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে বিশাল উপাত্ত সারিকে সংক্ষিপ্ত করে তুলনা, সম্পর্ক নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়। সময়, স্থান, গুণ ও পরিমাপভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ উপাত্ত বিশ্লেষণের বিভিন্ন মাত্রা উন্মোচন করে। এছাড়া, এটি উপাত্তের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুধাবন এবং গবেষণাকে কার্যকর করে তোলে। সুতরাং, উপাত্ত শ্রেণিবদ্ধকরণ পরিসংখ্যানের ভিত্তি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

No comments:
Post a Comment