উপাত্তের সংজ্ঞা দাও? উপাত্তের প্রকারভেদ এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য লিখ

উপাত্তের সংজ্ঞা দাও? উপাত্তের প্রকারভেদ এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য লিখ

ভূমিকা : পরিসংখ্যানিক তথ্য অনুসন্ধানের জন্য উপাত্ত সংগ্রহ অতান্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা উপাত্ত সংগ্রহ যত নির্ভুল ঘসে তার প্রাপ্ত ফলাফল তত নির্ভুল বা সঠিক হবে। এছাড়াও। উপাত্ত যে কোন পরিসংখ্যানিক গবেষণার দুলভিত্তি বা মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

উপাত্তের সংজ্ঞা প্রকারভেদ এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য লিখ

উপাত্তের সংজ্ঞা: উপাত্ত যে-কোন পরিসংখ্যানিক গবেষণায় মূলভিত্তি এটি হলো কোন বিষয় সম্পর্কে অভিব্যক্তি, অর্থাৎ তথ্য বিশ্বের প্রতিটি একক (unit) থেকে যে তথ্য বা খবরা খবর নেওয়া হয় তাকে উপাত্ত বলা হয়।

জি. আর এ জমস বলেন- উপাত্ত হলো বিশ্ব সম্পর্কে তথ্য বা পর্যবেক্ষণ বিষয়াবলি যা তথ্যমালাকে বুঝায়।

জন, গালতুং বলেন- উপাত্ত হচ্ছে প্রতিক্রিয়া বা লিপিবদ্ধ করণের প্রক্রিয়া অর্থাৎ উপাত্ত হচ্ছে কোন বিষয়ের অভিব্যক্তি বা সুপ্ত পর্যবেক্ষণ।

উদাহরণস্বরূপঃ কোন এলাকার ব্যক্তিবাসীদের আর্থসামাজিক জীবনধারা জানতে হলে ঐ এলাকার মানুষের অভিব্যক্তি জানাতে হবে, বক্তিবাসী তাদের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে যেমন- আয়, বয়স, ইত্যাদি। যে প্রতিক্রিয়া জানায় তাই হলো উপাত্ত।

উপাত্তের প্রকারভেদ আলোচনা কর। অথবা, উপাত্তের কত প্রকার ও কী কী?

উপাত্তের প্রকারভেদঃ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী উপাত্ত দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

১. গুণগত উপাত্ত ও ২. পরিমাণগত উপাত্ত।

১. গুণগত উপাত্তঃ যেসর উপাত্তকে সংখ্যার সাহায্য প্রকাশ করা সম্ভব নয় কিন্তু বিশেষ গুণের ভিত্তিতে পরস্পর, পরস্পর থেকে আলাদা হয় তাকে গুণগত উপাত্ত বলে। যেমন বুদ্ধি, সাফল্য মনোভাব প্রত্যাশা ইত্যাদি।

২. পরিমাণগত উপাত্তঃ যেসব উপাত্তকে সংখ্যার দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভর অর্থাৎ যা পরিমাপ বা গণনাযোগ্য তাকে পরিমাণগত উপাত্ত বলে। যেমন- বয়স, উচ্চতা, আয় ইত্যাদি

উৎস অনুযায়ী উপাত্তকে আবার দু-ভাসে আগ করা হয়েছে

১. প্রাথমিক উপাত্ত  ২. মাধ্যমিক উপাত্ত।

১. প্রাথমিক উপাত্তঃ যে উপাত্ত মূল উৎস হতে অর্থাৎ সরাসরি অনুসন্ধান ক্ষেত্র থেকে সংগ্রহ করা হয় তাকে প্রাথমিক উপাত্ত বলে। উদাহরণ- একজন গবেষক কোন গ্রামে গিয়ে সেই গ্রামের অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক, অবস্থা জানার জন্য তাদের কাছ থেকে সরাসরি উপাত্ত সংগ্রহ করলেন এগুলো প্রাথমিক উপাত্র।

২. মাধ্যমিক উপাত্তঃ মূল উৎস হতে সংগ্রহীত উপাত্ত যখন অন্য কোন গবেষণার প্রয়োজনে পুনরায় সংগ্রহ করা হয়। অগি পূর্বে সংগৃহীত প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত উপায় থেকে যে উলা সংগ্রহ করা হয় তাকে মাধ্যামিক উপাত্ত বলে।।

উদাহরণ: একজন গবেষক যদি কোন গ্রামের অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক জীবন দ্বারা সম্পর্কে উপাত্ত সংগ্রহ করাত সেই গ্রামের অধিবাসীদের কাছে না গিয়ে সে সম্পর্কে থানা, ইউনিয়ন পরিষদ, রেকর্ডবুক, সমাজকল্যাণ বিভাগ ইত্যাদি থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করেন, তবে সেই উপাত্ত হবে মাধ্যমিক উপাত্ত। 

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য লিখ

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উপাত্তের মধ্যে পার্থক্যসমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ

১. যে উপাত্ত সরাসরি অনুসন্ধান ক্ষেত্র হতে সংগৃহীত হয় তাকে প্রাথমিক উপাত্ত বলা হয়। অপরদিকে, যে উপাত্ত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংগৃহীত হওয়ার পর দ্বিতীয়বার অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে তখন তাকে মাধ্যমিক উপাত্ত বলে।

২. প্রাথমিক উপাত্ত সরাসরি কার্যক্ষেত্র হতে সংগ্রহ করা হয়।অন্যদিকে, মাধ্যমিক উপাত্ত অন্য কাজে ব্যবহৃত উপায় থেকে সংগ্রহ কথা হয়।

৩. প্রাথমিক উপাত্ত হলো প্রথম পর্যায়ভুক্ত। মাধ্যমিক উপাত্ত হলো দ্বিতীয়, তৃতীয় বা অন্য কোনো পর্যায়ভুক্ত।

৪. প্রাথমিক উপাত্তের উপর কোনরূপ পরিসংখ্যানিক উদ্ধৃতি প্রয়োগ করা হয় না।মাধ্যমিক উপাত্তের উপর একাধিক বার পরিসংখ্যানিক উদ্ধৃতি প্রয়োগ করা হয়।

৫. প্রাথমিক উপাত্ত সাধারণত মূল এককে সংগ্রহ করা হয়।মাধ্যমিক উপাত্ত মূল একক বা অন্য কোন এককে প্রকাশিত হয়।

৬. প্রাথমিক উপাত্ত অধিক নির্ভরযোগ্য।মাধ্যমিক উপাত্ত সব সময় নির্ভরযোগ্য নয়।

৭. প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহে অর্থ সম্যায় ও ব্যায়ের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি।মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করতে তেমন অর্থ ও সময় ব্যয় হয় না।

৮. প্রাথমিক উপাত্ত কোনোভাবেই মাধ্যমিক উপাত্তের উপর নির্ভরশীল নয়।মাধ্যমিক উপাত্ত সম্পূর্ণভাবে প্রাথমিক উপাত্তের উপর নির্ভরশীল।

৯. প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহ করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর প্রয়োজন।মাধ্যমিক উপাত্ত সংগ্রহ করতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মী না থাকলে ও চলে।

১০. প্রাথমিক উপাত্ত উপায় কেবল বড় প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করতে পারে।মাধ্যমিক উপাত্ত যে-কোনো প্রতিষ্ঠানই সপ্তাহ করতে পারে।

১১. প্রাথমিক উপাত্তের সৃষ্টি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।মাধ্যমিক উপাত্তের সৃষ্টি প্রকাশনার মাধ্যমে।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উপাত্ত এর মধ্যে উপযুক্ত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একথা বলা যায় যে, উভয়ই মূলত একই তথ্যমালা হতে সংগ্রহ শুধু মাত্র উৎসের ক্ষেত্রে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

No comments:

Post a Comment