নামসূচক স্কেল কি ? নামসূচক স্কেলের বৈশিষ্ট্য লিখ

নামসূচক স্কেল কি ? নামসূচক স্কেলের বৈশিষ্ট্য লিখ

সামাজিক গবেসনায় সংগৃহীত তথ্য বিভিন্ন মানদন্ডে পরিমাপ করা হয়। সংগৃহীত তথ্যাবলির উদ্দেশ্যানুযায়ী পরিমাপ একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। সামাজিক প্রপঞ্চ অধিকাংশ গুণবাচক হয়। তা সত্ত্বেও সেগুলি বিশেষ বিশেষ পরিমাপ করা যায়। এ পরিমাপের মধ্য অন্যতম নামসূচক স্কেল।

নামসূচক স্কেল কি ? নামসূচক স্কেলের বৈশিষ্ট্য লিখ

নামসূচক স্কেলঃ কোনো ঘটনা বা বস্তুকে নাম দ্বারা প্রকাশ করলে বা নাম দ্বারা পরিমাপ করলে তাতে নায়সূচক স্কেল বা পরিমাপক বলে। কোনো ব্যক্তি, বিষয় বা বস্তুকে নাম দ্বারা সূচিত করা যেতে পারে এবং সে অনুযায়ী স্কেল তৈরি হয়। কতকগুলো বাক্তিকে রহিম, মাহি, রানা, টিপু, সোহাগ প্রভৃতি নাম দ্বারা প্রকাশ করা যায়। ধর্মীয় দিক থেকে আমরা কোনো ব্যক্তিকে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নাম দ্বারা প্রকাশ করতে পারি। এক্ষেত্রে অবশ্য সংখ্যাকে বাবহার করা হয়নি। সংখ্যা ব্যবহারের প্রয়োজনও হয় না। তবে নামসূচক স্কেলকে সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা যেতে পারে। যেমন- গাড়ির মডেল নম্বর দ্বারা কোনো গাড়িকে চিহ্নিত করা যেতে পারে। বাড়ির নম্বর দিয়ে কোনো বাড়িকে চিহ্নিত বনা যেতে পারে। এক্ষেত্রে এসব সংখ্যা বা নম্বরকে গণনা করা যাবে না বা যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ বীজগাণিতিক কার্যাবলি সম্পাদন করা যাবে না। এ ধরনের স্কেল হলো পরিমাপের সর্বাপেক্ষা সহজতম স্তর। এ ধরনের দ্বারা দু'টি বিষয়ের মধ্যে তুলনা করা হয় না। অর্থাৎ, রাজু ও আদিব নাম দ্বারা দু'জন ব্যক্তির মধ্যে তুলনা করা হয় না। এখানে 'রাছ' বলতে একজন ব্যক্তির নাম বুঝানো হয়েছে। আবার 'আদিব' দ্বারাও একই অর্থে প্রকাশিত হয়েছে। এ দু'টি নাম যারা বলা হয়নি যে, হায় অপেক্ষাকৃত ভালো বা আদিব অপেক্ষাকৃত ভালো বিষয়টা এমন যে,

রাজু =একজন লোকের নাম।

আনিব= একজন লোকের নাম।

অর্থাৎ, নামসূচক স্কেলে ব্যবহৃত প্রতিটি নাম সমশ্রেণির অর্থ বহন করবে।

নামসূচক স্কেল পরিমাপের সর্বাপেক্ষা সহজতম স্তর। তাই এর ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি সতর্কতা প্রয়োজন। যেমন কলম বলতে আমরা বুঝি যা দিয়ে লিখা হয় এমন একটি বস্তুর নাম। এক্ষেত্রে কলম। বলতে লিখার উপযোগী যেকোনো কলমকে বুঝানো হয়। কিন্তু যদি বলা হয় বিভিন্ন কোম্পানির কলম।। তাহলে এক কোম্পানির কলম থেকে অন্যটি ভিন্ন এক্ষেত্রে দু'টি কোম্পানির কলমে সমতা আনা সম্ভব নয়। তাই কেবল সাধারণ বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে এখানে নাম দেওয়া হয়।

(C.R. Kothari)-এর মতে, 'নামসূচক স্কেল সাধারণভাবে একটি পদ্ধতি যাতে সংখ্যার প্রতীকসমূহকে নির্দিষ্ট করার জন্য লেবেল প্রদান করা হয়।

বস্তুত নাম সূচক স্কেলে সংখ্যা, লেবেল বা প্রতীক ব্যবহারের মাধ্যমে বস্তু, ব্যক্তি, অবস্থা বা সামাজিক প্রপঞ্চকে শ্রেণিকরণ করে পরিমাণ। করা হয়। নামসূচক স্কেলের সাহায্যে কোনো ব্যক্তি বা বিষয়ের বৈশিষ্ট্যগুলোকে একটি শ্রেণি হতে অন্য শ্রেণিতে পার্থক্য করা যায়। এজন্য নাম সূচক স্কেলকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।

নামসূচক স্কেলের বৈশিষ্ট্য লিখ। অথবা, নামসুচক স্কেলের গুণাবলি তুলে ধর।

সামাজিক গবেষণায় পরিমাপের কয়েকটি স্কেল রয়েছে। তন্মধ্যে নামসূচক স্কেল অন্যতম। নামসূচক স্কেল বলতে কোনো বস্তু, বিষয় বা ঘটনার নামকরণ বা লেবেলকরণের প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

সি. আর কোথারী বলেন, নামসূচক স্কেল সাধারণতারে একটি পদ্ধতি যাতে সংখ্যার প্রতীকসমূহকে নির্দিষ্ট করার জন্য লেবেল প্রদান করা হয়। নামসূচক স্কেলে লেবেল বা বাতীক ব্যবহারের মাধ্যমে বস্তু, ব্যক্তি ইত্যাদিকে শ্রেণিকরণ করা হয়।

নামসূচক স্কেলের বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো।

১. এটি পরিমাপের দুর্বলতম প্রক্রিয়াঃ পরিমাপের অন্যান্য প্রক্রিয়ার চাইতে এই প্রক্রিয়াটি দুর্বলতম এবং সহজ প্রক্রিয়া। তাই অনেকেই এ প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করেন।

২. এটি অতি সহজ-সরল এবং বহুল ব্যবহৃতঃ এই প্রক্রিয়াটি তুলনামূলকভাবে সহজ-সরল বিধায় অধিকাংশ সামাজিক গবেষকগণ এটি ব্যবহার করেন।

৩. প্রতিটি শ্রেণি পরস্পর স্বতন্ত্র থাকেঃ এই প্রক্রিয়ায় প্রতিটি বিষয়কে আলাদা ভাবে আলোচনা করা হয় বিধায় বিষয়টির স্বতন্ত্রতা রক্ষা পায়। এছাড়া আরো কতিপয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন-

* শ্রেণিকরণে সমান একক ধরা হয় না।

* এটি একটি নামকরণ প্রক্রিয়া।

* বিষয় বা বস্তুর সম্পূর্ণ অংশ এ স্কেলে অন্তর্ভুক্ত থাকে।

*বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে ক্রম বা ব্যবধান সংক্রান্ত সম্পর্ক নেই।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, নামসূচক স্কেলটি সবন কাছে সমাদৃত কারণ এর দ্বারা সমাজে বিদ্যমান উপাদানকে অত্যন্ত সহজ ও সংক্ষিপ্তাকারে ব্যাখ্যা করা যায়। সুতরাং সবশেষে একসা বলা যায় যে, সামাজিক গবেষণার গুণাত্মক যেকোনো বিষয় নামাসূচক জ্বেলের সাহায্যে পরিমাপ করা সম্ভব।

No comments:

Post a Comment