Harbert Spencer হার্বার্ট স্পেন্সারের জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্য বিশ্লেষণ

Harbert Spencer হার্বার্ট স্পেন্সারের জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্য বিশ্লেষণ কর

ভূমিকাঃ- হার্বার্ট স্পেন্সার (Harbert Spencer) বিবর্তনবাদী তত্ত্বের মূলভিত্তি স্থাপনে জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্বের প্রচ্ছন্ন আবদান রেখেছেন। কেননা, তিনি সমাজের বিবর্তনকে প্রধানত জীবজগৎ এর বিবর্তনের সংঙ্গে একিভূত করে আলোচনা করেছেন। তিনি জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্যতার বিশ্লেষই  হার্বার্ট স্পেন্সারের এর “জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্ব“ নামে পরিচিত।এতএব জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্য বিশ্লেষণ কে হার্বার্ট স্পেন্সারের জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্ব বলা হয়। সামাজিক বিবর্তন ও জৈবিক সাদৃশ্যতত্ত্বে হার্বার্ট স্পেন্সার এর অবদান অপরিসীম।
হার্বার্ট স্পেন্সার জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্য বিশ্লেষণ


জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্বঃ হার্বার্ট স্পেন্সারের বিবর্তন তত্ত্বের মূল ভিত্তি স্থাপনে জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্বের অবদান অনস্বীকার্য। সামাজিক বিবর্তন ও জৈবিক সাদৃশ্যতত্ত্ব প্রদান করেছেন হার্বার্ট স্পেন্সার। তার এই জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্য বিশ্লেষণই জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্ব নামে পরিচিত। এ কারণে হার্বার্ট স্পেন্সারকে জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্বের প্রবক্তা বলা হয়

জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্য বা  জৈবিক সাদৃশ্যসমূহ

দৃশ্যত জীবদেহ ও সমাজ দুটি পৃথক সত্তা হলেও হার্বার্ট স্পেন্সারের জীবদেহ ও সমাজের মধ্য ব্যাপক সাদৃশ্য  লক্ষ করা যায়। নিম্নে হার্বার্ট স্পেন্সারের জীবদেহ ও সমাজের মধ্যকার সাদৃশ্যর বিষয়গুলোর উল্লেখ করে।
১। জীবদেহ ও সমাজের কাঠামোগত জটিলতা আকারের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ উভয়ের আকারগত সম্প্রসারণের মাধ্যমে তাদের কাঠামো গত জটিলতা বৃদ্ধি পায়।

২। উভয় ক্ষেত্রে কাঠামোগত পৃথকীকরণ তারতম্যর সৃষ্টি করে। যেমন- জীবদেহের প্রতিটি অঙ্গ ভিন্ন ভিন্ন ক্রিয়া সমাপাদন করে।

৩। ক্রমবিবর্তন সমাজ ও জীবদেহের মধ্য শুধু কাঠামোগত পার্থ্যকই প্রতিষ্ঠা করে না, তা উভয় সত্তা নিরুপণ করে সুনির্দিষ্ট সম্পর্ককে আবদ্ধ পার্থক্য নির্দেশ করে।

৪। জীবদেহের সচেতনতা কেন্দ্রিভূত হয় মূল সমষ্টির একটি ক্ষুদ্র অংশে কিন্তু সমাজে এটি বিস্তৃত হয়  প্রতিটি ব্যক্তি বা সমাজের সদস্যের মধ্যে।

৫। সমাজ বিবর্তন ধারা ক্রমশ অগ্রগামী থাকে এবং এ বিবর্তনের শেষ ধাপ জানা নেই। অর্থাৎ সমাজে বিকাশ চলতে  থাকে।

৬। জীবদেহ এবং সমাজ এক সময় ধ্বংস হয়ে যায় । অর্থাৎ সমাজ ও জীবদেহ উভয়েরই ধ্বংস অনিবার্য।কিন্তু জীবদেহ এবং সমাজের এককসমূহ টিকে থাকে।

৭। একটি জীব অন্য জীব হতে কোন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে না তবে একটি সমাজ অন্য সমাজ হতে যে কোন সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ গ্রহণে সক্ষম।

৮। জীবদেহ ও সমাজদেহ উভয়ই অজৈব সত্তা হতে পৃথক এবং উভয়ের বিকাশ ও প্রবৃদ্ধি দৃশ্যমান।

৯। মানুষের মস্তিষ্ক যেমন সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে, তেমনি সমাজের প্রতিষ্ঠানই সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

১০। জীবদেহের অঙ্গ সমূহ অবিচ্ছেদ্যভাবে পরস্পরের সংঙ্গে সংযুক্ত কিন্তু সমাজের অংশসমূহ তুলনামূলকভাবে স্বাধীন ও পৃথকযোগ্য।

উপসংহার: আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, হার্বার্ট স্পেন্সার জীববৈজ্ঞানিক ধারণার ভিত্তিতে সমাজকে একটি জৈবিক সত্তা হিসেবে ব্যাখ্যা করে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করেন। তিনি মনে করেন, যেমন একটি জীবদেহে বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরস্পরের সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করে, তেমনি সমাজেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরস্পরের উপর নির্ভরশীল থেকে সামগ্রিকভাবে সমাজ পরিচালনা করে। সামগ্রিক সমাজব্যবস্থায় মূল চালিকা শক্তি পারস্পরিক নির্ভরশীলতা। মূলত হার্বার্ট স্পেন্সার (Harbert Spencer) তাঁর জৈবিক সাদৃশ্য তত্ত্বে এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা দিকটিকেই বিধৃত করেছিলেন যা পরবর্তীতে আরও পুনঃবিন্যস্ত ও পরিবর্ধিত হয়ে তার উত্তরসূরীদের নতুন সিদ্ধান্তের সন্ধান দেয়।  

No comments:

Post a Comment