সালিশ কি? বাংলাদেশের সালিশের প্রকৃতি সম্পর্কে লিখ।
ভূমিকাঃ বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের শতকরা ৬০ ভাগ লোক প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। আংলাদেমের বেশি ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে।আর গ্রামের মানুষের মাঝে শিক্ষার হার অনেক কম। বাংলার গ্রামের মানুষের মধ্যে যেকোন ধরনের বিচার করার জন্য সালিশ প্রথা অন্যতম। কারণ, গ্রামের মানুষের মধ্যে সালিশ প্রথার মাধ্যমে যে কোনো ধরনের গ্রাম পর্যায়ের অপরাধের বিচার করা হয়।
সালিশঃ সালিশ হলো এমন এক ধরনের বিচার ব্যবস্থা যা গ্রামাঞ্চলের মধ্যে কোন ধরনের অপরাধ সংঘঠিত হলে তা গ্রামের মাতবর, মেম্বার, চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে পরিচালিত হয়। সালিশ ব্যবস্তা যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটি বিচারব্যবস্থা যা সমাজব্যবস্থার জন্য এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমাদের সমাজের সকল জায়গায় কোন না কোন ধরনের অপরাধ সংঘঠিত হয়।আর এ সব অপরাধ সংঘঠিত হলে গ্রামের মাতবররা সবাই মিলে তার বিচার কার্য সম্পন্ন করে। আর গ্রামের সকল কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য গ্রামের সাধারণ মানুষগুলো এসব মন্ডল , মাতবরের উপর নির্ভর করে। কারণ এরা গ্রামের সকল আচার অনুষ্ঠান পালনের জন্য এসব নেতার উপর নির্ভর করে থাকে। আর এসব মাতবরের সালিশের মাধ্যমেই গ্রামের যেকোনো ধরনের সমস্যা সমাধান করা যায়।
পরিশেষে বলা যায় যে বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক সমাজে সালিশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ সালিশের মাধ্যমে সমাজের সকল ধরনের অস্থায়ী বা স্থায়ী সমস্যার সমাধান করা যায়।
বাংলাদেশের সালিশের প্রকৃতিঃ আমাদের দেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ । আর এ কৃষি প্রধান দেশে কৃষক পরিবার বেশি এবং এসব কৃষি সমাজে কোন প্রকার অপরাধ হলে সেটা মাতবর, চেয়ারম্যানসহ, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সালিশের মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়।নিম্নে সালিশের প্রকৃতি আলোচনা করা হলো।
১। বৈঠকঃ আমাদের দেশের সালিশ কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য প্রথমে বৈঠক আবশ্যক। কারণ সালিশের মাধ্যমে গ্রামের অনেক বিচারিক কার্যক্রম সম্পাদন করে। যা গ্রামের সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হয়।
২। বিচারিক ব্যবস্থাঃ আমাদের দেমের সালিশের প্রধান কাজ হলো বিচারিক ব্যবস্থা সম্পাদন করা। কারণ সালিশে সব গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ মাতবর, মেম্বর, চেয়ারম্যান সকলে একসাথে কাজ করে।কারণ সবাই মিলে মিশে দেশের বিচারের কার্যক্রম সম্পাদন করে। যা সমাজের জন্য বেশ উপকারি।
৩। সালিশের ভূমিকাঃ অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে গ্রামের সালিশের বৈঠক বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারন আমাদের দেশের সকল কার্যক্রম আইন ব্যবস্থার করা সম্ভব হয় না। তাই গ্রামের বিচার কার্যে সালিশের ভূমিকা অপরিসীম।
৪। সালিশের রায়ঃ সালিশের রায় নির্ভর করে মূলত অপরাধের মাত্রার উপর।আর গ্রামে যারা সালিশ পরিচালনা করে সাধারণত তারা সরাসরি নির্যাতিত ব্যক্তির ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ শুনে তারা সালিশের রায় নির্ধারণ করে।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল ও গ্রাম-নির্ভর সমাজে সালিশ বিচার ব্যবস্থা একটি কার্যকর, গ্রহণযোগ্য এবং ঐতিহ্যবাহী সামাজিক পদ্ধতি। এটি দ্রুত ও সহজ সমাধান প্রদান করে থাকে। যদিও সালিশ ব্যবস্থায় কখনো কখনো পক্ষপাতিত্ব, লিঙ্গবৈষম্য বা সামাজিক চাপের প্রভাব। তাই বলা যায়, সালিশ বিচার বাংলাদেশের সামাজিক জীবন ও গ্রামীণ শাসন ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গ্রামের মাঝে সালিশের ব্যবস্থা আজো প্রচলিত আছে বলে গ্রামে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মাত্রা খুবই কম।

No comments:
Post a Comment