চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী?

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী?

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী?

ভূমিকাঃ- ভারতের ইতিহাসে ব্রিটিশ শাসন একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ব্রিটিশ শাসনের প্রভাবে বাংলাসহ সমগ্র ভারতপর সমাজকাঠামোর উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধিত হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ সালে মোঘল সম্রাটের কাছ থেকে দেওয়ানি লাভ করে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের অধিকার প্রাপ্ত হয়। দেওয়ানি লাভের পর তাদের প্রধাব উদ্দেশে ছিল রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা এবং রাজস্ব আদায় ব্যবস্থা পরিবর্তন করা। এ উদ্দেশ্য ১৭৯৩ সালের ২২ শে মার্চ ভারতীয় গর্ভনর লী্ড কর্নওয়ালিস ঘোষিত আইন দ্বারা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা চালু হয়। জমি সংক্রান্ত কিছু প্রথা আইন দ্বারা চিরস্থায়ী করে দেওয়া হয় বলে এটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে পরিচিত।  এ প্রথা ১৬০ বছর পর্যন্ত টিকে ছিলো।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী?

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তঃ ১৭৫৭ সালের ঐতিহাসিক পলাশী যুদ্ধের মাধ্যমে ৭০০ বছরের মুসলিম শাসনের ক্ষমতা লখলের অবসান ঘটিয়ে ব্রিটিশ est India company প্রশাসনিক ক্ষমতা দখলের পর বাংলায় নতুন একটি ভূমিনীতি এবং রাজস্ব ব্যবস্থা চালু হয় যা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে পরিচিত। যার প্রধান পদক্ষেপই ছিলো permanent settlement of 1793 or the Sun set law.বস্তুত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নিছক কেন  ব্যাপকার্থে তৎকালীন ভারতের রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রধান দিক যা বাংলার স্থবির আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করে।

S Gopal's এর মতে The permanent settlement of the land revenue carried out in Bangal in 1973 is a landmark in the history not merely of that province but of India as a whole.

পূর্ববর্তী ব্যবস্থা অনুযায়ী জমিদাররা ছিল সরকার ও কোম্পানির রাজস্ব আদায়কারী শ্রেণি।অর্থাৎ জমিদাররা জমির মালিক ছিল না কিন্তু চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে তাদেরকে জমির মালিক ও স্বত্বাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।এ মালিকানার ফলে জমিদাররা ইচ্ছেমত জমি ক্রয় বিক্রয় বিলি ব্যবস্থা সবকিছু করারই অধিকার লাভ করে। এর ফলে জমিদারদের কি পরিমাণ রাজস্ব বছর শেষে আদায় করতে হবে তা চিরতরে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে জমিদারদের যে স্থায়ী বন্দোবস্ত করা হয় তাই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত অনুযায়ী বলা যায় যে জমিদাররা আদায়কৃত রাজস্বের নয় দশমাংশ কোম্পানির কাছে হস্তান্তরিত করবে।বছরের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ নির্দিষ্ট রাজস্ব কোম্পানির ঘরে জমা দিলে বংশানুক্রমে জমিদাররা জমির স্বত্বাধিকারী থাকবে এবং ভবিষ্যতে জমির মূল্য যাই হোক তাদের সাথে কোম্পানির কোন বন্দোবস্তের কোন পরিবর্তন হবে না। এ বন্দোবস্ত অপরিবর্তনীয় ও চিরস্থায়ী। জরিপ ছাড়াই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে তারা ভালো আবাদযোগ্য জমি থেকে শুরু করে অনেক সমৃদ্ধ বনাঞ্চলেরও মালিকে পরিণত হতো। এ বন্দোবস্তের ফলে কোম্পানি জমির উপর তাদের দাবি চিরকালের মতো ছেড়ে দিলেও এরপর জমি থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা তাদের জন্য নিশ্চিত হতো।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post