রক্ষণশীলতা কী? রক্ষণশীল ও প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে পার্থক্যসমূহ

রক্ষণশীলতা কী? রক্ষণশীল ও প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে পার্থক্যসমূহ

রক্ষণশীলতা কী?

মানবসমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল।সময়ের সাথে সাথে সমাজেও লেগেছে ব্যাপক পরিবর্তনের ছোঁয়া। বর্তমান সমাজে আজও দুই ধরনের গোষ্ঠী দেখা যায়। একদল হলো প্রগতিশীল যারা নতুনকে গ্রহণ করতে চায়। অন্যদল হলো রক্ষণশীল যারা পুরাতনকে আকড়ে ধরে পড়ে থাকতে চায়। তারা পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারে না।

রক্ষণশীলতা কী? রক্ষণশীল ও প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে পার্থক্যসমূহ

রক্ষণশীলতাঃ রক্ষণশীলতার ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Conservatism.  যার অর্থ নতুন কোন বিষয়কে মেনে না নেওয়া। সাধারণভাবে রক্ষণশীলতা বলতে বুঝায় প্রগতিশীলতার বিপরীত ধারণাকে। অর্থাৎ যে সমাজে পরিবর্তন সহজে মেনে নেওয়া হয়না এবং প্রচলিত সমাজব্যবস্থাকে আকড়ে ধরে ধর্মীয় নীতিবোধ, রীতিনীতি ও আদর্শকে প্রাধান্য দেওয়া হয় সে সমাজকে রক্ষণশীল সমাজ বলা হয়। যারা অতীত ঐতিহ্য, ধর্ম, বর্ণ, সংস্কার, কর্ম, পন্থা, প্রথা ইত্যাদি সবকিছুকে অতীত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বজায় রাখতে চায় এবং তারা পরিবর্তনশীল মনোভাব তৈরি করতে পারে না এবং নতুনকে গ্রহণ করার অভ্যাস ও তাদের নেই তারা পুরাতনকে নিয়েই পড়ে থাকতে চায় তাকেই রক্ষণশীলতা বা রক্ষণশীল সমাজ বলে।

উদাহরণস্বরুপঃ সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বী তারা তাদের পুরাতন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চায়। তারা পুরাতন সব প্রথাকে মেনে চলে। এমনকি সেসব যদি কুসংস্কারও হয় তাতেও তারা এতটুকু পরিবর্তন করবে না।

রক্ষণশীল মানেই হলো বজায় রাখা তারা তাদের অতীত ঐতিহ্যকে বজায় রেখে চলে পুরাতন জরাজীর্ণই তাদের কাছে অমূল্য রত্ন।

রক্ষণশীল ও প্রগতিশীল সমাজের বৈসাদৃশ্য লিখ।

রক্ষণশীল ও প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে পার্থক্যসমূহঃ রক্ষণশীল সমাজ ও প্রগতিশীল সমাজ হলো পরস্পরের বিরোধী সমাজ। অর্থাৎ এক সমাজ অন্য সমাজের এপিট ওপিট মাত্র। তাই এ দুই সমাজের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান।

নিম্নে রক্ষণশীল সমাজ ও প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে বিদ্যমান কয়েকটি পার্থক্য তুলে ধরা হলো-

১। রক্ষণশীল সমাজ হলো প্রগতি পরিপন্থী । প্রগতিশীল সমাজ প্রগতি পরিপন্থী নয়।

২। রক্ষণশীল সমাজ নতুনকে মেনে নেইনা এবং প্রগতিশীল সমাজ নতুনকে সাদরে গ্রহণ করে।

৩। রক্ষণশীল সমাজ আধুনিকতাকে মেনে নিতে পারে না। প্রগতিশীল সমাজ খুব সহজেই আধুনিকতাকে মেনে নিতে পারে।

৪। রক্ষণশীল সমাজ কুসংস্কারে বিশ্বাসী। প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে কোন কুসংস্কার থাকে না।

৫। রক্ষণশীল সমাজ হলো সংকীর্ণমনা  কিন্তু প্রগতিশীল সমাজ হয় উদারমনা।

উপসংহারঃ সর্বশেষ বলা যায় যে, রক্ষণশীল সমাজ কারো জন্য কাম্য নই। স্বাধীন ব্যক্তিত্ব বিকাশে ও স্বাধীনভাবে বুদ্ধিমত্তার কাজে লাগাতে সাহায্য করে প্রগতিশীল সমাজ।

Previous Post Next Post