সাম্রাজ্যবাদের পতনের কারণসমূহ লিখ

প্রশ্নঃ সাম্রাজ্যবাদের পতনের কারণসমূহ লিখ

সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ বর্তমান বিশ্বে দুইটি আলোচিত বিষয়। কেননা যুগে যুগে সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ বিশ্বের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে আসছে। সারা বিশ্বের মানুষ এর কবলে পড়ে সীমাহীন দুঃখ ভোগ করছে। দীর্ঘদীন ধরে সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে আসছে।প্রকৃতপক্ষে ইউরোপের প্রধান রাষ্ট্রসমূহ পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে তাদের ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করছে। আমাদের আলোচ্য বিষয় সাম্রাজ্যবাদ উপনিবেশবাদ ও একই মুদ্রার এপিট ওপিঠালোচনার পূর্বে এদের সংজ্ঞা, প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।

সাম্রাজ্যবাদের পতনের কারণসমূহ লিখ


সাম্রাজ্যবাদ পতনের কারণঃ সাম্রাজ্যবাদ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Imperialism যা রোমান শব্দ Imperium থেকেএসেছে। Imperium শব্দটি অর্থ হচ্ছে সামরিক অধিনায়কত্ব যা কেন বিধিবিধান মানে না।Imperium শব্দটি প্রথমে নেপোলিয়নের অনুসারীদের সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হত। বিশ শতকের মানুষ সাম্রাজ্যবাদের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন ছিলো। কারণ, বারবার এ সাম্রাজ্যবাদের দ্বারা বিশ্বশান্তি বিপর্যস্ত হয়েছে। তাই বলা যায় যে, সাম্রাজ্যবাদ হচ্ছে বিদেশি শাসনের ও অত্যাচারের বিভিন্ন রুপ যা গণতন্ত্র ও মূল্যবোধকে মর্যাদা দিতে অস্বীকার করে। অর্থাৎ দেশের জনগণের মতামতের কোন মূল্য না দিয়ে স্বৈরাচারী মতবাদের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। মুতরাং এক বিশাল আয়তন বিশিষ্ট রাষ্ট্রকে সাম্রাজ্যবাদ বলা হয় যা কমবেশি নির্দিষ্ট জাতীয় গোষ্ঠী দ্বারা গঠিত এবং কেন্দ্রীভূত ইচ্ছার দ্বারা পরিচালিত। নিম্নে সাম্রাজ্যবাদের পতনের কারণ তুলে ধরা হলো-

১। আফ্রিকা ও এশিয়ার ব্যাপক জাগরণঃ সাম্রাজ্যবাদের পতনের প্রধান কারণ হলো এশিয়া ও অফ্রিকার ব্যাপক জাগরণ। এর ফলে ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তারা জাতীয় মুক্তি আন্দোলন গড়ে তুললো। এই আন্দোলনের মুখে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি টিকে থাকতে পারলো না।

২। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আফ্রিকা, এশিয়া, আফ্রিকা  পূর্ব ইউরোপের ও ল্যাটিন আমেরিকার অনেক রাষ্ট্র জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের সূচনা করে।এ আন্দোলনে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ ভীত-সন্ত্রস্ত ও শঙ্খিত হয়ে পড়ে।

৩। জাতিসংঘের ভূমিকাঃ সাম্রাজ্যবাদের পতনে জাতিসংঘের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘ সনদে সাম্রাজ্যবাদের অবসানের কথা স্বার্থহীনভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত বহু রাষ্ট্রসাম্রাজ্যবাদের অবসান কল্পে জাতিসংঘকে চাপ দিতে থাকে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ ভূমিকা পালন করতে বাধ্য হয়।

উপসংহারঃ উপরের আলোচ্য বিষয় থেকে বলা যায় যে, সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ হচ্ছে একই মুদ্রার এপিটওপিট। কারণ এদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান।এদের একটিকে বাদ দিয়ে অন্যকে কল্পনা করা যায় না।

Previous Post Next Post