কৃষি কাঠামো কি? কৃষির উপকরণসমূহ লিখ

কৃষি কাঠামো কি? কৃষির উপকরণসমূহ লিখ

কৃষি কাঠামো কি?

কৃষি কাঠামো বলতে কি বুঝ?

ভূমিকাঃ- বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ।এদেশের শতকরা ৬০ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত এবং কৃষির উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। আর গ্রামের মানুষের মাঝে শিক্ষার হার অনেক কম। তাছাড়া আমাদের দেশের সকল ক্ষেত্র যথেষ্ট উন্নয়ন করা সম্ভব নই। কৃষি কাঠামোর উন্নয়ন করতে হলে  আমাদের দেশের কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি ব্যবহার করায় কোনো বিকল্প নেই।

কৃষি কাঠামো কি?


কৃষি কাঠামোঃ কৃষি কাঠামোর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Agrarian Structure কৃষি কাঠামো হলো এমন এক ধরনের কাঠামো যা কৃষিভিত্তিক সকলের কার্যক্রম  সম্পাদন করাকে বোঝায়। কৃষির সাথে সংযুক্ত সকল কাজকর্ম যেমন- বীজ, সার, তেলবীজ, তেল, জনবল ইত্যাদির সাথে ভূমির সম্পৃক্ত সব ধরনের কার্যাবলিকে কৃষি কাঠামো বলে।

প্রামাণ্য সজ্ঞাঃ বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী ও কৃষিবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে কৃষি কাঠামোর সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে কয়েকটি জনপ্রিয় সংজ্ঞা প্রদান করা হলো।

বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী বেতেলর মতে- ''কৃষি কাঠামো এমন এক ধরনের কাঠামো যেখানে মালিকানার নিয়ন্ত্রণে ভূমি সঠিক ব্যবহার করে শ্রমিক, সার, তেলবীজ ইত্যাদি সরবরাহ করাকে বোঝায়। মূলত কৃষি কাঠামো হলো সেই কাঠামো যা কৃষিকাজে সম্পৃক্ত সকল ধরনের কৃষিকাজকে বোঝায়। মূলত বীজ বপন থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করাকেই কৃষি কাঠামো বলা হয়।''

সমকজবিজ্ঞানী কাতার সিং বলেন- ''কৃষি কাঠামো হলো সেই কাঠামো যা প্রযোজনীয় যোগান ও সেবায় সমর্থন দিয়ে যৌথ চাষ ব্যবস্থা এবং জমির যথাযথ ব্যবহার করে কৃষি কাঠামোর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। একটি দেশের সমগ্র অর্থনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ ও উন্নতি নির্ভর করে সে দেশের কৃষি কাঠামোর উপর। এজন্য উন্নয়নশীল দেশ হতে হবে।কারণ, শিল্পভিত্তিক দেশে কখনো কৃষির মাপকাঠি অনুযায়ী আর্থিক উন্নয়ন বিবেচনা করা হবেনা। কারণ, মানুষ সর্বদা পরিবর্তন চায়। আর এ পরিবর্তনের জন্য চায় যে কোনো ধরনের কাঠামো। তেমনি আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে কৃষি কাঠামো হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

কৃষির উপকরণসমূহ:

কৃষি কাঠামোর কার্যকারিতা নির্ভর করে কৃষির বিভিন্ন উপকরণের উপর। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপকরণগুলো হলো:

১. উপযুক্ত জমি: চাষের জন্য উর্বর ও পানির সহজলভ্যতার জমি।

২. বীজ: উন্নত ও উচ্চফলনশীল বীজ কৃষির ফলন বাড়াতে সাহায্য করে।

৩. সার ও কীটনাশক: মাটির উর্বরতা রক্ষা ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন।

৪. শ্রম ও জনবল: কৃষিকাজে নিয়োজিত দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক।

৫. সেচ ব্যবস্থা: পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কৃষির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

৬. যান্ত্রিক সরঞ্জাম: আধুনিক কৃষিযন্ত্র (যেমন ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার) ব্যবহারে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৭. বাজার ও যোগাযোগ ব্যবস্থা: উৎপাদিত ফসলের বিপণনের জন্য সহজ বাজার ব্যবস্থা।

উপসংহারঃ উপরিউক্ত আলোচনা হতে পরিশেষে বলা যায় যে,  একটি দেশের বিশেষ করে একটি উন্নয়নশীল দেশের প্রধান সম্পদ বা উন্নয়নের মাধ্যম হলো কৃষি।কারণ আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। আর গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা হলো কৃষি। কারণ, ভূমি হচ্ছে গ্রামীণ সমাজের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। আর এ ধারা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তবে কৃষিতে বিরাজমান সমস্যাগুলি সমাধান করলে কৃষি কাঠামোতে পরিবর্তন সম্ভব।


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post