সিভিক এডুকেশন কী?
ভূমিকাঃ- শিক্ষা সভ্যতার মাপকাঠি। শিক্ষা ব্যক্তিত্ব বিকাশের সোপান। শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না। যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত।মানব জীবনের প্রতিটি স্তরে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
সিভিক এডুকেশনঃ সিভিক এডুকেশন একটি নাগরিক বিষয়ক ধারণা। সিভিক এডুকেশনের মাধ্যমে রাষ্ট্রে সুনাগরিক সৃষ্টি করা সহজ হয়। সাধারণত সিভিক এডুকেশন বলতে বোঝায় নাগরিক সম্পর্কিত শিক্ষা যা নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে জ্ঞান দান করে। সিভিক এডুকেশন বলতে নাগরিকতা বিষয়ক শিক্ষাকে বুঝায়।
Robert Ulich এর মতে, “সিভিক এডুকেশন হলো এক ধরনের গণতান্ত্রিক শিক্ষা, যে শিক্ষা রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের কতিপয় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সচেষ্ট করে।”
প্রখ্যাত শিক্ষা গবেষক হ্যারিস এর মতে-“সিভিক এডুকেশন হলো নাগরিক শিক্ষার সেই শাখা হয় শিক্ষার মাধ্যমে নাগরিক রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সক্রিয় হয় এবং নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করে।”
সিভিক এডুকেশনের গুরুত্ব:
১. সুনাগরিক গঠনে সহায়ক: সিভিক এডুকেশন নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলে, যা সুনাগরিক গঠনে সহায়তা করে।
২. গণতন্ত্র চর্চার শিক্ষা দেয়: এটি নাগরিকদের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান দেয় এবং তা চর্চা করতে উৎসাহিত করে।
৩. আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলে: নাগরিকরা আইন মেনে চলা ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন যাপনে উৎসাহিত হয়।
৪. সামাজিক দায়বদ্ধতা তৈরি করে: পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মনোভাব গড়ে ওঠে, যা সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৫. জাতি গঠনে ভূমিকা রাখে: সিভিক এডুকেশনের মাধ্যমে সচেতন, দায়িত্বশীল ও নৈতিকতাসম্পন্ন নাগরিক তৈরি হয়, যা একটি শক্তিশালী জাতি গঠনে সহায়ক।
পরিশেষে বলা যায় যে, শিক্ষা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানবের ভিতরে লুকায়িত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে তাকে উপযুক্ত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। সিভিক এডুকেশন হলো নাগরিক শিক্ষা সম্পর্কিত আলোচনা।
দূরশিক্ষণ কী?
দূরে বসে কোন মিডিয়ার মাধ্যমে নিজে নিজে শেখার মাধ্যম হলো দূরশিক্ষণ। বর্তমান পেক্ষাপটে দূরশিক্ষণ পদ্ধতির প্রসার ঘটেছে। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা দূরে বসে শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ পায়।
দূরশিক্ষণঃ দূরশিক্ষণ সাধারণ শিক্ষার একটি বিশেষ শাখা। আধুনিক শিক্ষাবস্থায় দূরশিক্ষণের গুরুত্ব অনেক। সাধারণ ভাবে বলা যায় দূরে বসে যে শিক্ষা গ্রহণ করা হয় তাই দূরশিক্ষণ।
Walter Perry এর মতে-“দূরে বসে নিজে নিজে শেখার কাজটি হলো দূরশিক্ষণ।”
Greville Rumble এর মতে-“সার্বাক্ষণিক শিক্ষকের প্রয়োজন না থাকে সে উদ্দেশ্যই স্বশিক্ষণ পদ্ধতিই হলো দূরশিক্ষণ।”
Dictionary of social science এর মতে-“দূরশিক্ষণ পদ্ধতি হলো মূলত ঘরে বসে পাঠ শেখা।”
দূরশিক্ষণের গুরুত্ব:
১. শিক্ষার সুযোগ বাড়ায়: যারা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না, যেমন-দুর্গম এলাকার মানুষ, চাকরিজীবী বা শারীরিকভাবে অক্ষম, তাদের জন্য দূরশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ।
২. সময় ও খরচ সাশ্রয় করে: দূরে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে না, ফলে সময় ও যাতায়াত খরচ কমে যায়।
৩. প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা: অনলাইন ক্লাস, ভিডিও লেকচার, ই-বুক ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুনভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ঘরে বসেই শিক্ষার্থীরা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে পারছে।
৪. আজীবন শিক্ষার সুযোগ দেয়: যে কেউ, যে কোনো বয়সে নিজের সুবিধামতো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, যা জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৫. উন্নত ও দ্রুত পাঠদান পদ্ধতি: স্বল্প সময়ে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকে, যা চাকরি বা অন্যান্য ক্ষেত্রে সহায়ক।
সুতরাং বলা যায় যে, দূরশিক্ষণ শিক্ষনের একটি মৌলিক দিক এটি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি নতুন সংযোজন। দূরশিক্ষণ হলো এমন এক শিক্ষা যা দূরে বসে ঘরে বসে শিখা যায়।শিক্ষকের সরাসরি উপস্থিতি ছাড়া দূরে বসে শিক্ষা গ্রহণ করাই হলো দূরশিক্ষণ। বিশেষভাবে তৈরী উপকরণের মাধ্যমে দূরে বসে শিক্ষার্থীরা যে শিক্ষা গ্রহণ করে তাই দূরশিক্ষণ।বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে দূরশিক্ষণ অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

No comments:
Post a Comment