গ্রামীণ সমাজের বৈশিষ্ট্য লেখ
গ্রামীণ সমাজের বৈশিষ্ট্য লেখ
গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান হলো গ্রামভিত্তিক সমাজবিজ্ঞান। গ্রামের আর্থসামাজিক অবস্থা বা সামাজিক কাঠামো সম্পর্কে সুশৃঙ্খল ও বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়নই হলো গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান। গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা। গ্রামীণ সমাজের সুনির্দিষ্ট এবং পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান হচ্ছে গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান। প্রতিটি সমাজের একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে । গ্রামীণ সমাজের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো।
গ্রামীণ সমাজের বৈশিষ্ট্যঃ গ্রামের পেশাগত অবস্থা ও ভৌগলিক পরিবেশের উপর ভিত্তি করে কতকগুলো বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান । অমরা যদি নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করি তবে গ্রাম সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে সচেষ্ঠ হবো।
১। আকৃতিঃ গ্রামগুলো জড়বদ্ধ গৃহ বা বিক্ষিপ্ত বসতবাড়ির সমষ্টি। বর্ষাকালে বর্ষার জলে যেন না ডুবে যায় ইহার প্রতিকার হিসেবে উচু ভিটার উপর গৃহ নির্মাণ এক গ্রামীন সমাজের সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
২। কৃষিভিত্তিক পেশাঃ গ্রামীণ সমাজের মানুষ নানা পেশায় নিয়োজিত থাকলেও কৃষিউ গ্রামীণ জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে থাকে। মানুষের ভোগের জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও অন্যান্য দ্রবাদি যোগানের জন্য খামারসমূহে গাছপালা লাগানো হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে আমেরিকাতে ১৯৪০ সালে ১৪ অথবা তদুর্দ্ধ ২০ মিলিয়ন লোকের মধ্যে ৯ মিলিয়নই কৃষিতে দক্ষ শ্রমশক্তির অংশ।
৩। কৃষকদের কাজের পরিবেশঃ কৃষিখাতে অধিক দৈহিক পরিশ্রমের প্রয়োজন হলেও কৃষকরা তাদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নির্মল বায়ু ও সূর্যরশ্মির মধ্যে কাজ করার সুযোগ পায়। যা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অতীব প্রয়োজন।
৪।পরিবার প্রথাঃ বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে সচারচর যৌথ পরিবার লক্ষ্য করা যায়। মা-বাবা, ভাই -বোন, চাচা-চাচী এবং আন্যান্য আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে গ্রামের পরিবার গঠিত।
৫। জনসংখ্যার ঘনত্বঃ গ্রামীণ সমাজের লোকসংখ্যা সাধারণত ২৫০০ এর উর্দ্ধে হবেনা। যেহেতু গ্রামে জনসংখ্যার ঘনত্ব কম।
৬। পেশাঃ গ্রামীণ সমাজে প্রধান পেশা কৃষি হলেও এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য, তাঁতী, কুমার, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ বসবাস করে।
৭। প্রতিষ্ঠানঃ গ্রামে লোকসংখ্যা কম তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলো অনেকগুলো একেবারে নগণ্য ও অনুন্নত। শির্পকলা ও আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার সুযোগ তেমন একটি নেই।
৮। অর্থনীতিঃগ্রামীণ সমাজের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। অবশ্য গ্রামে ছোট খাটো কুটির শিল্প দেখা যায়।
৯। শিক্ষাঃ গ্রামিণ সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় অধিকাং লোক নিরক্ষর।গ্রামীণ সমাজে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা, মক্তব দেখা যায়।
১০। যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গ্রামীণ সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।সগ্রামের অধিকংশ রাস্তাঘাট কাঁচা যা বর্ষার দিনে চলাচলের অনুপযোগী হয়ো উঠে।
১১। দলের প্রকৃতিঃ গ্রামীণ সমাজে বিভিন্ন প্রকার দল দেখা যায়। দল থেকে সমাজ অনেক বড় ও বিস্তৃত। এই দলগুলো গ্রামের দ্বন্দ্ব সংঘাত মীমাংসা করে থাকে।
পরিশেষে বলা যায় যে গ্রামীণ সমাজের সকল বৈশিষ্ট্যই যেন ইতিহাসের মত সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে।
Comments
Post a Comment