ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) কে আমলাতন্ত্রের জনক বলা হয় কেন?

ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) কে আমলাতন্ত্রের জনক বলা হয় কেন?

ম্যাক্স ওয়েবারকে আমলাতন্ত্রের জনক বলা হয় কেন?

ভূমিকাঃ- আমলাতন্ত্র একটি সরকার ব্যবস্থা যেখানে রাষ্ট্রের বেশিভাগ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের দ্বারা নেওয়া হয়।
ম্যাক্স ওয়েবারকে আমলাতন্ত্রের জনক বলা হয় কেন?


জার্মান সমাজবিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়েবার তার ‘Economy and society’ গ্রন্থে বলেন যে- একটি আমলাতন্ত্র সংস্থা সবচেয়ে দক্ষ কাঠামো প্রতিনিধিত্ব করে। বিশেষ দক্ষতা, নিশ্চয়তা, ধারাবাহিকতা এবং উদ্দেশ্যর একতাই এর মূল বৈশিষ্ট্য।

সুপ্রসিদ্ধ চিন্তাবিদ ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) আমলাতন্ত্রকে যুক্তিবাদী সংগঠন হিসেবে অ্যাখায়িত করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম আমলাতন্ত্রকে আধুনিক আমলাতন্ত্রে সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সে বিষয় ব্যাখ্যা করেন। ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) এর বিখ্যাত গ্রন্থ  ‘Eassys in Socilogy’ তে  আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য ও বিশদ আলোচনা করেছেন । ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) এ প্রসঙ্গে সমাজতাত্ত্বিক গবেষণার সূত্রপাত করেন। তাই ম্যাক্স ওয়েবারকে আমলাতন্ত্রের আধুনিক জনক বলা হয়। Max Weber আমলাতন্ত্রকে আইনগত ও যুক্তিসংগত আদর্শ কাঠামো হিসেবে বিশ্লেষণ করেন। তাঁর মতে এটি একটি আদর্শ কাঠামো। তাঁর আমলাতন্ত্রকে “concept of Rationalism’ বলে অবিহিত করা হয়েছে।

ম্যাক্স ওয়েবার কে আমলাতন্ত্রের জনক বলার কারণ

১। সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধিঃ ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) আমলাতন্ত্রকে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধি বিদ্যমান ব্যবস্থা বলেছেন। এখানে উধ্বতন অধস্তন অনুসারে কর্ম পরিধি বন্টন করা হয়েছে। প্রত্যেক কর্মচারী তার স্ব-স্ব নিদিষ্ট কাজ করে থাকেন।

২। পদক্রম নীতিঃ ম্যাক্স ওয়েবারের আমলাতন্ত্র সংগঠনে উধ্বতন ও অধস্তন সম্পর্ক বিরাজ করে। এতে অধস্তন অফিস নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনাধীন থাকে।

৩। কৌশল গত জ্ঞানের ভিত্তিতে নিয়োগঃ ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) বলেন কৌশলগত জ্ঞানের ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। কর্মচারীদের টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এভাবে ওয়েবার আমলাতন্ত্রিক সংগঠনের জন্য  বৃত্তিগত ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

৪। আমলাতান্ত্রিক সংগঠনে লিপিবদ্ধ কাজঃ এ সংগঠনের কাজসমূহ সিদ্ধান্ত এবং বিধিবিধান লিখিতভাবে উপস্থাপিত এবং রেকর্ড করা। বস্তুত ‍লিখিত বিধান ও অফিসের কাজ অফিস নামক একটি সংস্থায় পরিচালিত হয়।

৫। ভাতা প্রদানঃ আমলাতান্ত্রিক সংগঠনে কর্মচারীবৃন্দরা অর্থের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ভাতা লাভ ও পেনসন ভোগ করে থাকেন। কর্মচারীদের বেতন স্কেল পদ অনুযায়ী এ ভাতা বা পেনসন এর শ্রেণীবিন্যাস করা হয়।

৬। সততা ও নির্লিপ্ততাঃ ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) আমলাতন্ত্রকে সততার ও নির্লিপ্ততার সংগঠন বলে অভিহিত করেছেন। এভাবে আমলারা প্রাশসনিক হাতিয়ারের মালিকানা পৃথক থাকবে।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, ম্যাক্স ওয়েবার আমলাতন্ত্র সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ বৈশিষ্ট্য ও যুক্তিবাদি প্রতিষ্ঠিত করেছেন যার কারণে ম্যাক্স ওয়েবারের আমলাতন্ত্র সমালোচিত। আমলাতন্ত্র সমালোচিত হলেও তার সমর্থিত আমলাতন্ত্র (Bureaucracy) এক আদর্শিক মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post