প্রতীকী মিথস্ক্রিয়াবাদ কী? অহঃবোধ কি?
প্রতীকী মিথস্ক্রিয়াবাদ কী?
ভূমিকাঃ সামাজিক মনোবিজ্ঞানে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয় হলো প্রতীকী মিথস্ক্রিয়াবাদ। প্রতীকী মিথস্ক্রিয়াবাদ মূলত একটি সামাজিক মনোবিজ্ঞান দৃষ্টিভঙ্গি, যা সমাজবিজ্ঞানের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। এটি বিমূর্ত সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তে মানবিক ব্যবহারের মূর্ত দিক। এই প্রত্যয়টি প্রথম Georage Herbert mead and Herbert Blumer ব্যবহার করেন।
প্রতীকী মিথস্কিয়ার সংজ্ঞাঃ সাধারণভাবে মিথস্ক্রিয়া হচ্ছে সমাজস্থ মানুষের কার্যকরণ সম্পর্ক।আর এই কার্যকরণ সম্পর্কযখন ভাষা কিংবা প্রতীকের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় তথন তাকে প্রতীকী মিথস্ক্রিয়াবাদ বলে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ B. Sushmar তাঁর Dictionary of sociology (1987) গ্রন্থে বলেন ''Symbolic interaction and the typical form of communication interaction characteristic of human social life, involving either language or symbolic gestures. অর্থাৎ প্রতীকী মিথস্ক্রিয়াবাদ বলতে বোঝায় মানুষের সামাজিক জীবনের যোগাযোগ এবং আন্তঃক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যের একটি আদর্শ রুপ যা ভাষা কিংবা প্রতীকধর্মী ইশারা ইঙ্গিতের সাথে জড়িত।''
F. Abraham তাঁর 'Modern Sociological Theories' গ্রন্থে বলেন ''Symbolic interaction focuses on the nature of interaction the dynamic patterns of social action and social relationship.'' অর্থাৎ প্রতীকী মিথস্ক্রিয়ার প্রকৃতি সামাজিক কর্মকান্ডে এবং সামাজিক সম্পর্কের গতিময় রুপের উপর আলোচনা করে।''
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, প্রতীকী মিথস্ক্রিয়াবাদ হলো এমন কিছু কাজ যা মানুষ আন্তঃযোগাযোগ বা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করে। সমাজবিজ্ঞানীরা এটা ব্যবহার করে বিভিন্ন গবেষণাকার্য সম্পূর্ণ করে থাকেন।
অহঃবোধ কি?
ভূমিকাঃ মনোবিজ্ঞানে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয় হলো অহঃবোধ। কিন্তু বর্তমানে সমাজবিজ্ঞানেও অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে এর আলোচনা করা হয়। কেননা এর মাধ্যমে ব্যক্তির আচরণ এবং সামাজিক আচরণ তথা সামষ্টিক আচরণ নির্ধারণ করা হয়। সাধারণ কথায় ব্যক্তি যা জানে বা বলে থাকে তাকেই অহঃবোধ বলে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ জর্জ হার্বার্ট মিড এর মতে 'অহঃবোধ হচ্ছে একটি ফলাফল যা অন্য লোকের সম্পর্কের দ্বারা সৃষ্টি হয়।'
জনসন এর মতে 'অহম হচ্ছে এক প্রকার অভ্যন্তরীণ বিষয় যা মানুষের ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করে।'
চার্লস হরটন কুলী বলেন 'সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যক্তির বিশিষ্ট ভূমিকার অহঃবোধ প্রভাবিত হয়। অর্থাৎ অন্যান মানুষের সাথে আদান প্রদানের মাধ্যমে বক্তির মধ্যে নিজের সম্পর্কে যে ধারণার উদ্ভব হয় তাই অহঃবোধ।
পরিশেষে বলা যায় যে সামাজিক মিথস্কিয়ার মধ্য দিয়েই অহঃবোধের উদ্ভব হয়। ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির বা ব্যক্তির সাথে গোষ্ঠির মধ্যকার সম্পরক দিয়ে অহঃবোধ শক্তিশালী হয়। অহঃবোধের উদ্ভবের ফলে ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে সচেতন হয়।
Comments
Post a Comment