AGIL প্রত্যয়টি ব্যাখ্যা কর

AGIL প্রত্যয়টি ব্যাখ্যা কর

AGIL প্রত্যয়টি ব্যাখ্যা কর।

ট্যালকট পারসন্স ছিলেন বিংশ শতকের একজন অন্যতম আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী। তিনি কাঠামোগত কার্যকারিতার আলোকে তার Social Action, Social System, Social Change  সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বের ব্যাখ্যা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি সমাজবিজ্ঞানকে সামাজিক ক্রিয়া হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আবার Action এর সাথে তিনি সমাজবিজ্ঞানকে সামাজিক পরিবর্তন ও ব্যবস্থার মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করেছেন।

ট্যালকট পারসন্সের AGIL প্রত্যয়টি ব্যাখ্যা কর

AGIL পরিকল্পনার ব্যাখ্যাঃ নিম্নে সংক্ষেপে AGIL প্রত্যয়টি এর ব্যাখ্যা দেওয়া হলো-

১। অভিযোজনঃ অভিযোজন পদ্ধতি এবং পারস্পরিক অবস্থার মধ্যে সম্পর্ক দেখানো হয়। এটা দুই ধরনের। যথা- (ক) বশ্যতা বা আত্মসমর্পণ (খ) সুবিধাকরণ।

পরিবেশের চাপের মাধ্যমে বশ্যতা স্বীকার করা হয়। আর সুবিধাকরণ হলো অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।

২। লক্ষ্য অর্জনঃ পারসন্সের মতে প্রত্যক কাজেরপিছনেই একটি লক্ষ্য রয়েছে। লক্ষ্য দুই প্রকার যথা (ক) অভিপ্রায় লক্ষ্য (খ) অনভিপ্রায় লক্ষ্য।

অভিপ্রায় লক্ষ্যঃ এটা মানুষের জন্য জরুরি ও প্রাথমিক  প্রয়োজন নির্দেশ করে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য অর্থনৈতিক স্বচ্চলতা আনয়ন করা।

অনভিপ্রায় লক্ষ্যঃ মানুষের সব লক্ষ্যই অভিপ্রায় লক্ষ্য নয় কিছু কিছু লক্ষ্য অনভিপ্রায় হয়।

৩। একাঙ্গীকরণ/মিশ্রণঃ সমাজ ব্যববস্থায় যেসব কার্যকারীতা রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একাঙ্গীকরণ। সামাজিক ব্যবস্থায় অনেক সদস্য বাস করে সুতরাং এ বসবাসকারী সদস্যদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক থাকতে হয়। একাঙ্গীকরণ এর কাজ হলো সমাজ ব্যবস্থার বিভিন্ন অংশের মধ্যে সমন্বয় করা।

৪। সুপ্ত আদর্শরীতির রক্ষণাবেক্ষণঃ সমাজের দুটি সংঘর্ষমূলক পরিস্থিতির মাঝখানে যে স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজমান করে তাই হলো সুপ্ত আদর্শরীতির রক্ষণাবেক্ষণ। প্রত্যেক সমাজের গুরুত্ব পূর্ণ প্যাটার্ন হলো বিলম্ব।

সামাজিক ব্যবস্থা ও উপব্যবস্থাঃ সমাজের কাঠামো কিভাবে তৈরি হয় এবং অন্যান্য পদ্ধতির সাথে কীভাবে খাপ খাওয়ানো যায় সেটাই এর আলোচ্য বিষয়। এক্ষেত্রে পারসন্স চারটি পদ্ধতির কথা বলেছেন।

(ক) সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাঃ সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় বিষয় হলো আভিধানিক এবং সব সাংকেতিক ব্যবস্থা। পারসন্সের মতে আমাদের সব সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা সমাজের মূল্যবোধ ব্যক্তি আত্মস্থ করে।

(খ) সমাজব্যবস্থাঃ সমাজ ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় একক হলো ভূমিকা প্রত্যাশা। আমরা সবার কাছে কিছু না কিছু আশা করি।

(গ) ব্যক্তিত্ব ব্যবস্থাঃ ব্যক্তিত্ব ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় একক হলো স্বতন্ত্র কর্ম। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।

(ঘ) আচরণিক জৈব তত্ত্ব ব্যবস্থাঃ আচরণিক তত্ত্বের কেন্দ্রীয় প্রত্যয় হলো জৈবিক অনুভূতি। পারসন্স বলেন সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় সব কিছু একে অপরের সাথে যুক্ত।

পরিশেষে বলা যায় যে ট্যালকট পারসন্সের সামাজিক পদ্ধতি তত্ত্বের কিছু সমলোচনা থাকলেও সমাজবিজ্ঞানে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পারসন্স যতগুলি তত্ত্ব প্রদান করেছেন তার মধ্যে সমাজব্যবস্থা তত্ত্বটি অন্যতম।

Previous Post Next Post