পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবারের মধ্যে ৫ টি পার্থক্য লেখ।
পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবারের মধ্যে ৫ টি পার্থক্য লেখ।
পরিবার হলো বাবা মা ভাই বোন একত্রে বসবাস করার নাম। পরিবার ছাড়া সমাজ গঠিত হয় না। বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবার গঠিত হয়। পরিবারের ধরন দেশ, কাল, পাত্র, ক্ষমতা, আবাসন ইত্যাদি ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। পরিবারের প্রধান দুটি ধরন হলো পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক। এ পরিবার সাধারনত পরিবারের ক্ষমতা কাঠামোর উপর নির্ভর করে গড়ে উঠে। অর্থাৎ বলা যায় পরিবারের ক্ষমতা যার উপর ন্যস্ত হবে পুরুষ বা নারী তার উপর ভিত্তি করেই এই পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবারের উদ্ভব।
পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবারের মধ্যে পার্থক্যঃ পরিবার হলো একটি সর্বজনীন সামাজিক প্রতিষ্ঠান। নিম্নে পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবারের মধ্যে ৫টি পার্থক্য উল্লেখ করা হলো-
১। যে পরিবারের কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা পরিবারের পিতা, স্বামী বা বয়স্ক কোন পুরুষের হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে পিতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে। অর্থাৎ বয়স্ক পুরুষ এখানে ক্ষমতা ধারন করে। অপরদিকে, যে পরিবারের কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা পরিবারের মাতা, স্ত্রী বা বয়স্ক কোন নারীর হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে।
২। সন্তানদের বংশ পরিচয় সাধারণত পিতা তথা পুরুষের দিক থেকে নির্ধারিত হয়। অপরদিকে মাতৃতান্ত্রিক পরিবারে সন্তানদের বংশ পরিচয় সাধারণত মাতা তথা মহিলার দিক থেকে নির্ধারিত হয়।
৩। পিতৃতান্ত্রিক পরিবার ব্যবস্থায় যাবতীয় নীতি নির্ধারণ ও কর্তৃত্ব পিতাই ঠিক করে। মাতৃতান্ত্রিক পরিবার ব্যবস্থায় মহিলাই প্রধান এবং যাবতীয় নীতি নির্ধারণ ও কর্তৃত্ব মাতাই ঠিক করে ।
৪। আজকের দিনে পিতৃতান্ত্রিক পরিবার বেশি প্রচলিত। আজকের দিনে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার ব্যবস্থা খুবই বিরল।
৫। পিতৃতান্ত্রিক পরিবারে সন্তানদের উত্তরাধীকারী, প্রাপ্ত সম্পদ বা সম্পত্তি প্রভৃতি পিতার দ্বারাই নির্ধারিত হয়। অন্যদিকে মাতৃতান্ত্রিক পরিবারে সন্তানদের উত্তরাধীকারী, প্রাপ্ত সম্পদ বা সম্পত্তি প্রভৃতি মায়ের ভাইয়ের দ্বারা নির্ধারিত হয়।
৬। বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা, রোমান সমাজব্যবস্থা এমনকি বিশ্বের অধিকাংশ সমাজে এ ব্যবস্থা বিরাজমান। অপরদিকে বাংলাদেশের গারো সমাজে সাধারণত মাতৃতান্ত্রিক পরিবার লক্ষ্য করা যায়।
পরিশেষে বলা যায় যে, পরিবার সে পিতৃতান্ত্রিক হোক বা মাতৃতান্ত্রিক এর প্রধা উদ্দেশ্য হলো যৌনতৃপ্তি, সন্তান জম্মদান ও লালনপালন। সামাজিকীকরণের মাধ্যমে পরিবার সন্তানদের সমাজিক মানুষে পরিণত করা। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় শিক্ষাসহ নানা রকমের শিক্ষায় অবদান রাখে পরিবার।
Comments
Post a Comment