সামাজিক স্তরবিন্যাসের ধরণসমূহ বিবরণ দাও।
প্রশ্নঃ সামাজিক স্তরবিন্যাসের ধরণসমূহ বিবরণ দাও।
বাংলাদেশের সামাজিক স্তরবিন্যাসের ধরণসমূহ একটু আলাদা। নিম্নে বাংলাদেশের ধরণসমূহ আলোচনা করা হলো-
১। দাস প্রথা
২। এস্টেট প্রথা
৩। জাতিবর্ণ প্রথা
৪। সামাজিক শ্রেণী ও মর্যাদা গোষ্ঠী।
১। দাসপ্রথাঃ দাসপ্রথা হলো আদীমকালের পরবর্তী প্রথা। দাস প্রথা প্রথম গ্রীক সভ্যতায় দেখা যায়। কারণ, ইউরোপে অনেক আগে থেকে রাজা বাদশাদের কাজকর্ম সম্পাদন ও যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করার উদ্দেশ্য দাসপ্রথা চালু ছিল। কারণ, দাসপ্রথার কারণে আমাদের দেশের ব্রিটিশ শাসকেরা নীল চাষের জন্য বাধ্য করত। তাই দাস প্রথা তখন ইউরোপে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।তাছাড়া গৃহস্থালীর কাজ সম্পাদন করার জন্য দাসপ্রথা বেশ জনপ্রিয় ছিলো। দাসপ্রথায় ছিলো Slave master ও salve. দাসরা সর্বদা দাস মালিকের আনুগত্য প্রকাশ করত। কারণ তারা ছিলো মালিকের পুতুল তারা সর্বদা মালিকের সকল কাজের নির্দেশ মেনে চলত। তাই দাস প্রথা ছিলো তখনকার যুগে এক বর্বর প্রথা, কারন দাসদের কোন সামাজিক মর্যাদা ছিলো না।
২। এস্টেট প্রথাঃ ইউরোপের সমাজ জীবনে এস্টেট প্রথা দেখা যায়।কারণ ইউরোপে এস্টেট প্রথা ছিল একটি ধর্মীয় প্রথা।কারণ, ইউরোপে এস্টেট প্রথা ছিলো একটি ধর্মীয় প্রথা। কারণ, এখানে যাজক শ্রেণী, যোদ্ধা শ্রেণী, সাধারণ শ্রেণী ছিল। এই ব্যবস্থায় যাজক সম্প্রদায় শাসন ব্যবস্থার কাজে নিয়োজিত থাকত। কারণ, তখন যাজকযরা রাষ্ট্রের নিয়ম তৈরী করত। যারা যোদ্ধাশ্রেণী ছিল তারা মূলত সকল ধরনের যোদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করত। সামাজিক শ্রেণীর মধ্যে যারা ছিলো তারা হলো সাধারণ মানুষ। এরা অনেক সময় নানা ধরনের বঞ্চনার শিকার হতো।
৩। জাতিবর্ণ প্রথাঃ মধ্য ইউরোপে জাতিবর্ণ প্রথা বেশ প্রভাব বিস্তার করেছিল। তবে ভারতে জাতিবর্ণ প্রথা বেশ প্রভাব বিস্তার করে। কারণ, ভারতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বেশি। তাছাড়া সমাজের সকল জায়গায় ধনী-গরীব, জাতি ভেদের পার্থক্য দেখা যায়।যা জাতিবর্ণ প্রথায় এক অভিশপ্ত কাজ। আমাদের জীবনে জাতিবর্ণ প্রথা বেশ প্রভাব বিস্তার করে থাকে। কারণ জাতিবর্ণের মাধ্যমে মানুষের মাঝে মানুষের দুরত্বের সৃষ্ট হয়। আর একসাথে সবাই চলাচল বা বসবাস করতে পারে না। কারণ এখানে শুধু যারাই ব্রাহ্মণ তারাই ধর্ম গ্রন্থ পড়তে পারবে এবং ধর্মের রক্ষা কবজ হিসেবে কাজ করে। যা অন্যান্য নিচু বংশের মানুষদের আরও অবজ্ঞা করে। আমাদের দেশে সাধারণত এ সমস্যা দেখা যায়।
৪। সামাজিক শ্রেণিঃ আমাদের আধুনিক সমাজে যে আর একটি শ্রেণির উদ্ভব হয়েছে তাকে আমরা সামাজিক শ্রেণি বলি। কারণ এ সামাজিক শ্রেণির মাধ্যমেই আধুনিক সমাজের সৃষ্ট হয়েছে। এ আধুনিক সমাজে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা দেখা যায় যেখানে পুঁজিবাদিরা অর্থ উপার্জন করে আর শ্রমিক শ্রেণী সর্বদা শোষিত হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক স্তরবিন্যাস হলো সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের একটি সামাজিক মর্যাদা।
Comments
Post a Comment