প্রচুরক কাকে বলে? প্রচুরকের সুবিধা ও অসুবিধা ও ব্যবহার আলোচনা কর।
ভূমিকাঃ- তথ্যসারির মানগুলি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় সারির মাঝামাঝি একটি কেন্দ্রীয় মানের চতুর্দিকে তথ্যমালার ঘনত্ব বেশি। এর কারণ হলো তথ্য সারিতে একিট মানের সর্বাধিকবার অবস্থানের ফলে এ ধরনের পরিস্থিতি আগমন ঘটে। এক্ষেত্রে মানটি তথ্য সারির বৈশিষ্ট্যর পরিমাপক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন রাখে যাকে প্রচুরক নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।
simpson and kafka said 'The mode is the most common value'.
কোনো তথ্য সারিতে একাধিক প্রচুরক থাকে। যেমন ২,৫,৮,৩,৫,৭,৪,৭,৬ সংখ্যাগুলোর মধ্যে ৫ এবং ৭ সংখ্যাদ্বয় দুবার সংঘটিত হয়েছে তাই এদের প্রচুরক দুটি। এ ধরনের নিবেশনকে Bimodal freuency distribution বলে।
সুতরাং বলা যায় অশ্রেণীকৃত তথ্যসারিতে যে সংখ্যাটি সবচেয়ে বেশিবার পাওয়া যায় তাকে প্রচুরক বলে। যেমন- ৬,২,৪,৮,৩,৪ সংখ্যাগুলোর মধ্যে ৪ সবচেয়ে বেশিবার আছে। সুতরাং সংখ্যাগুলোর প্রচুরক ৪।
প্রচুরকের সুবিধাবলিঃ কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপক হিসেবে প্রচুরক এর অনেক সুবিধা রয়েছে । প্রচুরকের সুবিধাসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
১। অবস্থানগত পরিমাণ: প্রচুরক মূলত এক প্রকার অবস্থানগত পরিমাপ যা সহজে বুঝা যায়।
২। অপ্রভাবিত: অবস্থানগত পরিমাপ হওয়ার কারণে চরম মান ও প্রান্তিক মান দ্বারা প্রভাবিত হয় না।
৩। মুক্ত প্রাপ্ত শ্রেণী উপযোগীঃ খোলা শ্রেণীতে প্রচুরক নির্ণয়ে কোনো অসুবিধা হয় না।
৪। সংজ্ঞাগত: সংজ্ঞার দিক থেকেও প্রচুরক সহজবোধ্য।
৫। গুণবাচক তথ্যর ক্ষেত্রেঃ সংখ্যাবাচক নয় এমন তথ্যর প্রচুরক নির্ণয় সম্ভব।
৬। পর্যবেক্ষণযোগ্য: লেখচিত্রে এদখানো যায় তাই প্রচুরক পর্যবেক্ষণযোগ্য।
৭। সকল ক্ষেত্রে নির্ণয়যোগ্য: প্রচুরক তথ্যসারির ছোট বড় সকল ক্ষেত্রেই নির্ণয় করা যায়।
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রচুরকের সুবিধা আলোচনা করতে গিয়ে দেখা যায় যে মূলত অশ্রেণীকৃত তথ্যসারিতে যে সংখ্যাটি সবচেয়ে বেশিবার থাকে তাই প্রচুরক হিসেবে পরিচিত।
প্রচুরকের অসুবিধাঃ প্রচুরকের সুআইধার পাশাপাশি অসুবিধা ও বিদ্যমান। নিম্নে প্রচুরকের অসুবিধাগুলি পেশ করা হলো-
১। সব তথ্যর সাথে সংশ্লিষ্ট হয় না তাই ভ্রান্তির সম্ভবনা থাকে।
২। প্রচুরক সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হয়।
৩। নমুনা তারতম্য দ্বারা প্রভাবিত হয়।
৪। ভবিষ্যত গাণিতিক প্রক্রিয়ায় ব্যবহারের অযোগ্য।
৫। অনিয়মিত নিবেশনের প্রচুরক নির্ণয় জটিল বিষয়।
৬।বীজগাণিতিক প্রক্রিয়ায় প্রয়োগ করা যায় না।
৭। প্রচুরককে যেহেতু বিভিন্নভাবে নির্ণয় করা যায় ফলে প্রচুরকের মানের কিছু পার্থক্য দেখা যায়।
৮। তথ্য সারির সবগুলো তথ্য একই সংখ্যা বারর বার বার ঘটলে প্রচুরক নির্ণয় করা যায় না।
প্রচুরকের ব্যবহার আলোচনা কর
কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের প্রচুরক হচ্ছে এমন একটি তথ্যমান যা তথ্যসারিতে কোনো গণসংখ্যা নিবেশনে সবচেয়ে বেশিবার পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু কিছু সংখ্যক উপায়কে সংঘটিত হয়েছে। সাজালে দেখা যাবে এর মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু মান অধিকবার প্রচুরকের ব্যবহার প্রচুরক কেন্দ্রীয় প্রবণতার একটি শুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ বা মধ্যক মান। ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যেমন- ১.প্রতিদিনের কর্মে প্রচুরক ব্যবহার হয়।
২. অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ, যেমন- মজুরি, যোগান, আয় এবং চাহিদা ইত্যাদি বিশ্লেষণে এটি ব্যবহার করা হয়।
৩. গুণবাচক উপাত্তের ক্ষেত্রে প্রচুরক ব্যবহার করা হয়।
৪. বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে প্রচুরক ব্যবহার করা হয়।
৫. বাজারজাতকরণ, পণ্য বিচার ও নেতার চাহিদা নিরূপণে প্রচুরক ব্যবহৃত হয়।
৬. শিল্প কারখানা দ্রব্য উৎপাদনের পরিমাণ প্রচুরকের মাধ্যমে ঠিক করা হয়।
৭. সমাজ গবেষণা কর্মে কেন্দ্রীয় পরিমাণ হিসেবে প্রচুভক ব্যবহার করা হয়।
৮. জলবায়ু ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানে প্রচুরক ব্যবহার করা হয়।
৯. চিকিৎসাশাস্ত্রেও এর ব্যবহার রয়েছে।
১০. জাতিতাত্ত্বিক ব্যাখ্যায় প্রচুরক ব্যবহার করা হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রচুরকের বাবহার এর আলোচনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

No comments:
Post a Comment